বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে তৈরি হচ্ছে বাতাসের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র
বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে তৈরি হচ্ছে বাতাসের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র
২০ শে এপ্রিল, ২০১১
দেশের জ্বালানি সংকট উত্তরণে ২০১৫ সালের মধ্যে বায়ু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ১শ
মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায় সরকার। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের
বিনিয়োগে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। আর সে
কারণে বিভিন্ন উচ্চতায় বাতাসের গতিবেগ কত, তার পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র (উইন্ড
ম্যাপ) প্রয়োজন। কিন্তু দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বায়ুর বেগ পুরোপুরি জানার
পরিপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহে নেই। তাই
সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগ প্রথমবারের মতো দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বাতাসের
গতিবেগ বিষয়ক একটি পরিপূর্ণ মানচিত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইউএসএআইডি
অর্থায়নে ২ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বিদ্যুৎ
বিভাগের পক্ষ থেকে গত মাসে প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদনের জন্য
একটি প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে । এ প্রকল্পের আওতায় উপকূলে
প্রায় ৫০ কিলোমিটারব্যাপী ১শ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগের
পরিমাপ নেয়া হবে। এজন্য ২ কি.মি. পরপর উঁচু টাওয়ার স্থাপন করা হবে। এক বছর
ধরে প্রতিদিনের ডাটা সংগ্রহ করা হবে। পরে সফ্টওয়্যারের সহায়তায় একটি আধুনিক
বায়ু মানচিত্র তৈরি করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণে আরো একটি ছোট প্রকল্প
বাস্তবায়িত হতে পারে। এজন্য এডিবি প্রায় ৫ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিবে।
অন্যদিকে সরকারি উদ্যোগে বাতাসের মানচিত্র তৈরির জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে বলেছে। এ
বিষয়ে পিডিবি'র চেয়ারম্যান এএসএম আলমগীর কবীর শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান,
সরকারি অথবা বেসরকারি যেভাবেই হোক বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাতাসের একটি
পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র প্রয়োজন। এটা না হলে কোনো ব্যক্তি এ খাতে বিনিয়োগে
এগিয়ে আসবে না। তিনি জানান, উইন্ড ম্যাপিং-এর জন্য পরামর্শক নিয়োগের
প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ জানতে ইওআই
(এঙ্প্রেসন অব ইন্টারেস্ট) আহ্বান করেছে পিডিবি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে দেড়
থেকে ২ কোটি টাকা খরচ হতে পারে।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে ৩ বার কাজ হয়েছে। এর
মধ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন একটি ম্যাপিং করেছে। এ ম্যাপিংগুলোতে
সর্বোচ্চ ৩০ মিটার পর্যন্ত গতিবেগের পাঠ নেয়া হয়েছে, যা বায়ুচালিত
বিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে পর্যাপ্ত নয়।
ছাড়া ছাড়াভাবে করা এসব ম্যাপিং দিয়ে দেশের বায়ু বিদ্যুতের প্রকৃত সম্ভাবনা
জানা সম্ভব নয় বলে শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, কারো
মতে দেশে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা নেই। আবার কেউ বলেন প্রচুর সম্ভাবনা
রয়েছে। একটি পরিপূর্ণ উইন্ড ম্যাপ থাকলে এটা স্পষ্ট বলা সম্ভব হতো
বাংলাদেশে কতটুকু বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব, কোন কোন অঞ্চল বায়ুভিত্তিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভালো।
বর্তমানে দেশে ২টি বায়ুচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ১শ
কিলোওয়াটের একটি ফেনীতে। অন্যটি কুতুবদিয়ায়, যার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১
মেগাওয়াট। তবে কারিগরি ত্রুটিসহ নানা কারণে এ কেন্দ্র দুটি এখন বন্ধ রয়েছে।
www.somewhereinblog.ne
No comments:
Post a Comment