Thursday, June 21, 2012

নতুন দিনের নতুন সম্ভাবনা : শক্তির বিকল্প উৎস

নতুন দিনের নতুন সম্ভাবনা : শক্তির বিকল্প উৎস

শক্তিই হচ্ছে মানব সভ্যতার প্রধান চালক। কিন্তু প্রচলিত শক্তির উৎসের সঞ্চয় খুবই সীমিত এবং মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে সঞ্চয় ভাণ্ডার ক্রমশই ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাই আগামী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য শক্তির নতুন উৎস সন্ধান খুবই জরুরি। বিজ্ঞানীরা এরই মধ্যে শক্তির বিকল্প উৎসের খোঁজে নানা গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেছেন। আগামী দিনের সম্ভাবনাময় এসব বিকল্প শক্তির উৎস নিয়ে এবারের বিজ্ঞানবিশ্ব আয়োজনটি সাজানো হয়েছে।

পারমাণবিক শক্তি

পারমাণবিক শক্তিকে বিদু্যৎ উৎপাদনের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছোট আকারের একটি পরমাণু কেন্দ্র হতে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব। মূলত নিউক্লিয়ার বিভাজন বা সংযোজন পদ্ধতিতে যে বিপুল তাপের উদ্ভব ঘটে, সেই পরিমাণ তাপকে পারমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্রে পানির বাষ্পীভবনের কাজে লাগানো হয়। উত্তপ্ত বাষ্প বা স্টিম টারবাইনকে ঘোরায় এবং টারবাইন ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে সংযুক্ত জেনারেটরও ঘুরতে শুরু করে। আর এর ফলে বিদু্যৎ উৎপন্ন করা যায়। তবে এ ব্যবস্থাটি যেমন জটিল ও ব্যয় সাপেক্ষ, তেমনি যেকোনো ধরনের অসাবধানতা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষিত করতে পারে।

স্রোত ও প্রবহমান পানি থেকে শক্তি

পানির স্রোত বা প্রবহমান পানি থেকে বিদু্যৎ উৎপাদন করা যায়। নদী, সাগর এমনকি জোয়ার-ভাটার স্রোতকে কাজে লাগিয়ে এবং খালের মতো কৃত্রিম জলপথে প্রবাহ তৈরি করে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদু্যৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এতে কোনো ধরনের দূষণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

ঘরোয়া সৌরশক্তি

সূর্যই হচ্ছে সকল শক্তির উৎস। সৌরবিদু্যৎতন্ত্র তার ফটোভোল্টিক কোষের বিদু্যৎ শক্তিতে পরিণত করে। সোলার ওয়াটার হিটার যন্ত্রে পানি গরম করতে তাপ সংগ্রাহক প্যানেল ব্যবহার করা হয়। সৌরশক্তি অফুরন্ত, সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এবং নবায়নযোগ্য। একটি উদাহরণের মাধ্যমে সৌরবিকিরণ থেকে প্রাপ্ত সৌরশক্তির বিপুল সম্ভাবনা বোঝানো যাবে। সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে যে পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয়, তা বত্রিশ মিনিটে যে পরিমাণ সৌরবিকিরণ ঐ দেশে পড়ে, তার থেকে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সৌরবিকিরণে প্রাপ্ত সৌরশক্তিকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার উপযুক্ত প্রযুক্তি এখনও করায়ত্ব হয়নি। তবে উন্নত দেশগুলোতে সৌরশক্তিকে কিভাবে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করা হচ্ছে।

সৌরখামার

সৌরখামার থেকে দুটি উপায়ে প্রচুর পরিমাণে বিদু্যৎ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রথমত, সৌরতাপ পস্নান্টগুলোতে আয়না দিয়ে সূর্যের আলোকে ঘনীভূত করা হয়। এ পদ্ধতিতে পানি থেকে তৈরি করা বাষ্প দিয়ে টারবাইন ঘোরানো হয়।

দ্বিতীয়ত, আলোক কোষ ব্যবহার করে সরাসরি সূর্যশক্তি থেকে বিদু্যৎ উৎপাদন করা হয়।

তবে, এ পদ্ধতিতে কিছু সমস্যা রয়েছে। কারণ, সূর্য সব সময়ের জন্য আকাশে থেমে থাকে না। রাতে বা মেঘলা দিনে এর থেকে সরবরাহ পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া রয়েছে বিনিয়োগের সমস্যা। কারণ, এ ধরনের খামার তৈরি করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়।

ঘরোয়া বায়ুশক্তি

প্রতিটি বাড়িতে নিজস্ব বিদু্যৎ সরবরাহের জন্য বাড়ি বাড়ি ছোট আকারের টারবাইন লাগিয়ে বিদু্যৎ তৈরির পস্নান্ট তৈরি করা যেতে পারে। এ ধরনের পস্নান্ট হতে ১-২৫ কিলোওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন করা সম্ভব। বায়ুশক্তির মাধ্যমে ৮০ ফুট টাওয়ারের উপর ১০ থেকে ২৫ ডায়ামিটার পাখা স্থাপন করলে পানির মোটর চালানোসহ বাতি জ্বালানো ও অন্যান্য কাজ করা সম্ভব। তবে এর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শব্দদূষণ।

বায়ুখামার

বায়ুশক্তি থেকে বৈদু্যতিক শক্তি উৎপাদনের কেন্দ্র সর্বপ্রথম ডেনমার্কে স্থাপিত (১৮৯০ সালে) হয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বায়ুশক্তি দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বায়ুচালিত জেনারেটর ঘোরানো হচ্ছে। দেশটিতে বায়ুশক্তি ব্যবহার করে ১৮০০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন করা হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মোট চাহিদার পাঁচ ভাগের এক ভাগ বায়ুশক্তির সাহায্যে উৎপাদিত বিদু্যৎ দিয়ে মেটানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবার, ডেনমার্কের মোট শক্তির বিশ শতাংশ মেটানো হয় বায়ুশক্তিকে ব্যবহার করে। শক্তির এ উৎসটি পরিবেশবান্ধব ও নবায়নযোগ্য। তবে, এ ধরনের বায়ুখামারে চালিত টারবাইন পক্ষীকুলের চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে, যা স্থানীয় পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

ভূ-উত্তাপ শক্তি

ভূ-ত্বকের নিচে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জমা আছে। ভূ-তাপীয় শক্তি বর্তমানে বিদু্যৎশক্তি উৎপাদনের একটি অন্যতম উৎস। এই ভূ-উত্তাপ শক্তি বিদু্যৎ উৎপাদন এবং ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট উষ্ণ রাখার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট ভূ-উত্তাপ শক্তি উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে দুই হাজার আট শত মেগাওয়াটই আমেরিকাতে উৎপাদিত হচ্ছে। আইসল্যান্ড বিদু্যৎ উৎপাদন ও ঘর গরম করার কাজে ব্যবহূত শক্তির বেশির ভাগই সংগ্রহ করে ভূ-তাপীয় শক্তির উৎস থেকে। নিউজিল্যান্ড ও ইতালির মোট ব্যবহূত শক্তির ১১ শতাংশ এবং ৩ শতাংশ সংগ্রহ করে ভূ-তাপীয় শক্তি থেকে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং দিনরাত সবসময়ই এ থেকে শক্তি সরবরাহ পাওয়া সম্ভব। তবে, এ পদ্ধতিতে বিদু্যৎ উৎপাদনের পূর্বে বিশাল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হয়।

বৈদু্যতিক গাড়ি

বৈদু্যতিক গাড়ি থেকে কোনো ধরনের ধোঁয়া বের হয় না। এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচও খুবই কম। তবে, ব্যাপকভাবে প্রচলনের জন্য এটিকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে আরও উন্নত করার কথা ভাবছে বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলো।

হাইড্রোজেন পরিবহন

হাইড্রোজেন ফুয়েল সেলে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় উৎপাদিত হয়। এর সাহায্যে চলে একটি বৈদু্যতিক মোটর। এ ধরনের ইঞ্জিন থেকে পানি নির্গত হয়। তবে, এ প্রযুক্তির কিছু সমস্যা রয়েছে। বিপুল পরিমাণ হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যাবহার করতে হয়, ফলে এতে কার্বন উৎপাদনের কিছু সম্ভাবনা থেকেই যায়।

সমুদ্রের তাপীয় শক্তির পরিবর্তন

সৌর কিরণের প্রভাবে সমুদ্রের উপরিভাগ ও নিম্নভাগের পানির তাপমাত্রার পার্থক্য থেকে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদু্যৎশক্তি উৎপাদন করা সম্ভব। সমুদ্রের পানির তাপীয় অসমতা থেকে বিদু্যৎ উৎপাদন করার প্রযুক্তিকে সমুদ্রের তাপীয় শক্তির পরিবর্তন প্রযুক্তি বা ওটেক বলা হয়। এই শক্তিকে পুরোপুরি বিদু্যৎশক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে তা হবে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহূত বিদু্যতের চেয়ে বিশগুণ বেশি।

যেভাবে দিনের পর দিন বিদু্যতের চাহিদা বাড়ছে, তাতে জীবাশ্মজ্বালানি থেকে লাগামহীনভাবে বিদু্যৎ উৎপাদন হতে থাকলে আগামী দিনে বিশ্বের জ্বীবাশ্ম জ্বালানির সঞ্চয় অবশ্যই ফুরিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে বিদু্যৎ উৎপাদনে বিকল্প উৎসগুলোর উপর নির্ভরশীলতা ক্রমশই বাড়তে থাকবে। বিকল্প শক্তির উৎসগুলো ব্যবহারে কিছু জটিলতা ও সমস্যা থাকলেও এসব শক্তির উৎসই আগামীদিনের প্রধান শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত হবে।
Source: Daily Ittefaq

বিদ্যুতের বিকল্প কী হতে পারে?

বিদ্যুতের বিকল্প কী হতে পারে?

দেশব্যাপী লোডশেডিংজনিত ভয়াবহ বিদ্যুতের ঘাটতি জনজীবন স্থবির করে তুলেছে। শিল্প-কলকারখানা মারাত্মক হুমকির মধ্যে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে কিন্তু এই মুহূর্তে বিদ্যুতের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে পারছে না। অথচ উন্নত দেশে বিদ্যুতের রয়েছে নানা বিকল্প। যেখানে বিকল্প এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে বিদ্যুত্ পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে। কন্তু কীি হতে পারে বিদ্যুতের বিকল্প? এ নিয়ে লিখেছেন— সাদ আব্দুল ওয়ালী
আমরা প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চাই অথচ বিদ্যুতের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারছি না। দিন দিন বিদ্যুত্ সঙ্কট তীব্রতর হচ্ছে। বলতে গেলে, জনজীবন ক্রমে স্থবির হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিক বিদ্যুত্ চাহিদার কাছাকাছিও আমরা যেতে পারছি না। অর্থাত্ যেমন বিদ্যুত্ উত্পাদনের কোনো লক্ষ্যমাত্রাও নেই, তেমনি নেই কোনো অগ্রগতি। সরকারেরও এ ব্যাপারে নেই কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনা। বিদ্যুতের এই চরম সঙ্কটে দেশবাসী উত্কণ্ঠিত—কীভাবে মিলবে এর সুষ্ঠু সমাধান। তবে বিদ্যুতেরও রয়েছে বিকল্প। কিন্তু তা কী হতে পারে?
বিকল্প শক্তির উত্স বিদ্যুতের বিকল্প শক্তির উত্স খোঁজা হচ্ছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, সমগ্র বিশ্বে এ তত্পরতা বেড়ে চলেছে। তবে নবায়নযোগ্য শক্তিকে কাজে লাগানোর প্রয়াস অগ্রগণ্য। উন্নত দেশসহ উন্নয়নশীল দেশেও বিকল্প শক্তির প্রসারে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব বিকল্প শক্তি যেমন—সোলার প্ল্যান্ট, উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট, পারমাণবিক শক্তি, ভূ-উত্তাপ শক্তি, সাগরের তাপশক্তির রূপান্তর উল্লেখযোগ্য। সৌর বিদ্যুত্-সোলার প্ল্যান্ট সোলার পাওয়ার একটি নবায়নযোগ্য উত্স। ফলে এখানে বিকল্প বিদ্যুত্ হিসেবে সোলার প্ল্যান্ট কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশে বছরে গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ দিন সূর্যালোক থাকে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ কিলোওয়াট ঘণ্টা শক্তি এ দেশের প্রতি বর্গমিটার জমিতে আছড়ে পড়ছে। আর ভূপতিত এই সৌরশক্তিকে সঠিকভাবে বিদ্যুত্শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারলে বাংলাদেশের বিদ্যুত্ চাহিদার একটা বড় অংশ মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। একটি সোলার প্ল্যান্টে প্রাথমিক বিনিয়োগ অনেক বেশি মনে হলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ন্যূনতম কিছু খরচ ছাড়া আর তেমন খরচ হয় না। এরজন্য মাসিক কোনো বিল দিতে হচ্ছে না। গরমকালে তিন মাসে বিদ্যুত্ ঘাটতি অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। লক্ষ্য করার বিষয়, সৌর বিদ্যুতের পিক সময় হচ্ছে গরমকাল। অর্থাত্ গরমকালে সূর্যের বিকিরণ হয় সর্বোচ্চ। কাজেই আমাদের দেশে সৌরবিদ্যুেক যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব। এই সোলার প্ল্যান্টের সবচেয়ে বড় বাধা এর প্রাথমিক বিনিয়োগ। সে ক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রসারের মাধ্যমে একসঙ্গে অনেক প্ল্যান্ট স্থাপনে এবং স্থানীয় মার্কেটে এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রগুলো তৈরির মাধ্যমে এ বিনিয়োগ কমে যেতে পারে অনেকাংশেই।
কারা ব্যবহার করছেন সৌরবিদ্যুত্ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা সৌরবিদ্যুত্ নিয়ে তাদের গবেষণা ও প্রসার অব্যাহত রেখেছে। সাধারণত আমাদের দেশের যেসব এলাকায় অর্থাত্ প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে বিদ্যুত্ এখনও পৌঁছেনি, সেখানে সৌরশক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখের মতো মানুষ সৌরবিদ্যুত্ ব্যবহার করছে। এসব এলাকার সচ্ছল পরিবারের মানুষ এ প্রযুক্তির সুবিধা নিচ্ছে। ভারতে সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা হচ্ছে এবং সেখানে ভবিষ্যতের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, রাজস্থানে এ সৌরবিদ্যুত্ খুবই সম্ভাবনাময়। নেপালেও সৌরবিদ্যুত্ উত্পাদিত হচ্ছে।
বায়ুশক্তিচালিত বিদ্যুত্-উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট বাতাসের শক্তিকে একটি সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা সম্ভব। আর তা করা যায় উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের দ্বারা। দেশের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় ১০০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনে উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট বা বায়ুশক্তিচালিত বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এটিও একটি নবায়নযোগ্য শক্তির উত্স। এটি বিদ্যুত্ উত্পাদনের সহায়ক হিসেবে কাজে লাগতে পারে। বায়ুশক্তিচালিত টারবাইন দ্বারা যথেষ্ট বিদ্যুত্ উত্পাদন করা সম্ভব। বিভিন্ন দেশে এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশে গত দুই বছর আগে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তা হচ্ছে পিডিবির ব্যবস্থাপনায় কুতুবদিয়ায় পাইলট প্রকল্পের অধীনে একটি উইন্ডমিল তৈরি করা হয়েছিল, যার উত্পাদন ক্ষমতা ছিল এক মেগাওয়াট। সমুদ্রের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অফশোর উইন্ডমিল বানানো এবং রক্ষণাবেক্ষণ ভূমিতে বানানো উইন্ডমিলের চেয়ে ব্যয়বহুল হলেও এটি হবে জোরালো এবং সব সময় বাতাসের উত্স থাকায় উত্পাদন বেড়ে যাবে অনেকাংশে। তা ছাড়া এ ধরনের উইন্ডমিল আকারে বড় হবে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ডেনমার্ক, হল্যান্ড এ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে শক্তি ও বিদ্যুত্ উত্পাদনের দিক থেকে অনেক অগ্রসরমান। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যেমন—নেপাল ও ভারতে এ ধরনের উইন্ডমিল স্থাপন করা হচ্ছে।
ভারত ও নেপালে বায়ুশক্তিচালিত বিদ্যুত্ ভারতে বায়ুশক্তি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০১২ সাল নাগাদ ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। উজানা গেছে, নেপাল খুব শিগগিরই নবায়নযোগ্য শক্তির একটি উত্স হিসেবে বায়ুশক্তি ব্যবহার করতে যাচ্ছে। এ জন্য তারা একটি জাতীয় পলিসির খসড়াও চূড়ান্ত করেছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বিদ্যুত্ উত্পাদনে বাণিজ্যিক টারবাইন স্থাপন করা। এতে একটি পাইলট স্কিমের আওতায় ৫০০ কিলোওয়াটের অধিক শক্তি জেনারেট করতে পারবে। সোলার প্ল্যান্ট অপেক্ষা এটি একটি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি। তা ছাড়া টারবাইন স্থাপনের জন্য স্থানীয় মার্কেট থেকে এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রাদি পাওয়া যাবে। পারমাণবিক শক্তি পারমাণবিক শক্তি দ্বারা বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যেতে পারে। অবশ্য বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট চিন্তাভাবনা করছে। একটি ছোট আকারের পরমাণু কেন্দ্র থেকে অসম্ভব পরিমাণে শক্তি উত্পাদন করা সম্ভব। এ পারমাণবিক শক্তি বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি সহায়ক সমাধান হতে পারে। তবে এ ধরনের বিদ্যুত্ উত্পাদনে বড় বাধা হচ্ছে এর ক্ষতিকর বর্জ্য এবং ব্যয়বহুল উত্পাদন ব্যয়।
জিওথার্মাল বা ভূ-উত্তাপ শক্তি শীতপ্রধান দেশে এ ধরনের শক্তি কাজে লাগানোর প্রয়াস লক্ষণীয়। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাতে যে শক্তি পরিলক্ষিত হয় তার চেয়েও কয়েকগুণ শক্তি ভূপৃষ্ঠের নিচে সংরক্ষিত রয়েছে। এই ভূ-উত্তাপ ব্যবহার করে শীতপ্রধান দেশে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট উষ্ণ রাখাসহ বিদ্যুত্ উত্পাদনের কথা জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছে। এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে উত্পাদিত প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট জিওথার্মাল বা ভূ-উত্তাপ শক্তির মধ্যে আমেরিকাতে প্রায় দুই হাজার ৮শ মেগাওয়াট শক্তি উত্পাদিত হচ্ছে। এটি ব্যয়বহুল প্রজেক্ট।
সাগরের তাপশক্তির রূপান্তর সাগরের পানিতে ওপরে এক রূপ আর নিচের দিকের পানিতে আরেক রূপ। সূর্যের আলোয় ওপরের পানি ক্রমে উষ্ণ হয় এবং নিচের দিকের পানি থাকে শীতল। অল্প তাপে ফুটতে থাকে এমন তরল গ্যাস ব্যবহার করে সাগরের ওপরের দিকের পানি থেকে তাপ সংগ্রহ করে বিশেষ প্ল্যান্টের সহায়তায় টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যায়। আবার এ তরল গ্যাসকে সাগরের গভীরে পাঠিয়ে পানি শীতল করা সম্ভব। এর মাধ্যমে কয়েকগুণ বেশি বিদ্যুত্ উত্পাদন করা যেতে পারে।
করণীয় যা হতে পারে আমাদের দেশে সৌরবিদ্যুত্ প্রকল্প শুরু হয়েছিল প্রথমে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে। কিন্তু আজ আমাদের জাতীয় বিদ্যুত্ ব্যবস্থার যে অবনতি তাতে সৌরবিদ্যুতের সম্ভাবনাকে স্তিমিত রাখা মোটেও যুক্তিসঙ্গত হবে না। বরং এ প্রযুক্তিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের। এর মাধ্যমে আমরা বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা মেটাতে পারব নিঃসন্দেহে। শহরে বাড়ির ছাদে সৌরবিদ্যুত্ প্ল্যান্ট স্থাপন করা যেতে পারে। সমপ্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌরবিদ্যুত্ প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যা একটি শুভ উদ্যোগ হিসেবে চিহিত। ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাতে এ প্রযুক্তি প্রসার লাভ করতে পারে সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্পসুদে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যুতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কমিটি বিকল্প শক্তি হিসেবে সৌর, বায়ু এবং পানি বিদ্যুত্ উত্পাদনের সুপারিশ করেছেন। দেশে উত্পাদিত বিদ্যুতের শতকরা ৮৬ ভাগ উত্পন্ন হয় গ্যাসচালিত বিদ্যুেকন্দ্র থেকে। আর বাকি বিদ্যুত্ উত্পন্ন হয় তরল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে। সামান্য পরিমাণ বিদ্যুত্ উত্পন্ন হয় সৌরশক্তি থেকে। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। আরও অধিক পরিমাণে সৌরবিদ্যুত্ উত্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া বায়ুশক্তি বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি নির্ভরযোগ্য উত্স হতে পারে। বর্তমান সরকার পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের কথা চিন্তাভাবনা করছে। এ শক্তির দ্বারা বিকল্প বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি পদক্ষেপ নিতে পারে এ সরকার। বিদ্যুতের বিকল্প নবায়নযোগ্য কী কী শক্তি কাজে আসতে পারে তা যাচাই-বাছাই ও পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্তে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় বিদ্যুত্ একটি অতীব চাহিদাসম্পন্ন উপকরণ। বিদ্যুত্ ব্যবস্থার সঠিক প্রাপ্তি সুনিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের জীবনযাত্রা, শিল্প, কলকারখানা, অফিস, ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রে যে অচল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় থাকবে না। কাজেই আমাদের যেমন বিদ্যুত্ উত্পাদন বাড়াতে হবে, তেমনি প্রচলিত এই বিদ্যুত্ ব্যবস্থার বিকল্প কী হতে পারে সে ব্যাপারে ভেবে শিগগিরই একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
ইমেইল: walisearch@yahoo.com

Wednesday, June 20, 2012

Fuel Saver & Power Tune Electricity Saver: Save up to 25% monthly electricity bill

Please click this image for large View

বিদ্যূত খরচের ব্যাপারে সাবধান ....

 বিদ্যূত খরচের ব্যাপারে সাবধান ....

গত মার্চ মাস থেকে বিদ্যূত বিলের রেট বেড়েছে .... নতুন রেটটা এমন:
০-১০০ ইউনিট: ৩.০৫ টাকা/ইউনিট,
১০০-৪০০ ইউনিট: ৪.২৯ টাকা/ইউনিট,
৪০০+ ইউনিট: ৭.৮৯ টাকা/ইউনিট।
তবে, এই কাহিনীর সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং অংশ হল, ৩০১ ইউনিট কিংবা এর বেশি ব্যবহার হলে মোট ব্যবহার যেই উচ্চতর মূল্য শ্রেণীতে পড়বে পুরা বিলই সেই ইউনিটের চার্জ হবে। অর্থাৎ ৪০০ ইউনিটের ব্যবহার চার্জ ৪.২৯ * ৪০০ = ১৭১৬ টাকা হলেও ৪০১ ইউনিটের বিল হবে ৪০১ * ৭.৮৯ = ৩১৬৩.৮৯ টাকা। surprised অর্থাৎ ১৭১৬ টাকার পরের ব্যবহার খরচ ৩১৬৩.৮৯ টাকা, এর মাঝে ১৭১৬ + ৭.৮৯ =১৭২৩.৮৯ টাকা টাইপের কোনো ব্যবহার খরচ নাই! এগুলোর সাথে ভ্যাট, লাইন রেন্ট ইত্যাদি যোগ হয়ে মোট বিল হবে।
সুতরাং, বুঝে শুনে বিদ্যূত ব্যবহার করুন, তা না হলে মাথায় বিলের বজ্রপাত হতে পারে।  shame

২৭-০৬-২০১২

 

নিয়ন্ত্রক (এডমিন)

http://forum.projanmo.com 


সোলার এনার্জি সেলস উদ্ভাবন করে ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী


সোলার এনার্জি সেলস উদ্ভাবন করে ইতিহাস গড়লেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী
০ ইত্তেফাক রিপোর্ট

বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর সোলার এনার্জি সেলস উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে ম্যারিল্যান্ডের কপিন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং গবেষক বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ডঃ জামালউদ্দিন ইতিহাস গড়েছেন। কপিন স্টেট ইউনিভার্সিটির ন্যাচারাল সাইন্সের সহকারী অধ্যাপক এবং ইউনিভার্সিটির নেনোট্যাকনোলজি রিচার্স সেন্টারের গবেষক ডঃ জামালউদ্দিন এবং তার পাঁচ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষানবিশ গবেষকরা স্পেক্ট্রোল্যাবের সোলার সেলের তুলনায় প্রায় ৪ পারসেন্ট অধিক কার্যকর সোলার এনার্জি সেল উদ্ভাবন করলেন।

প্রসঙ্গত, এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সোলার এনার্জি সেল তৈরির শীর্ষস্থানটি দখলে রেখেছে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রোল্যাব। ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সোলার সেল তৈরির সুনামটিও তাদের। নিজের এই উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়াতে ডঃ জামালউদ্দিন জানান, এটা সত্যিই রোমাঞ্চকর এবং আশাব্যঞ্জক একটি বিষয় যা আরো অধিক নেনোট্যাকনোলজির ওপর গবেষণাকল্পে আমাদের আরো উৎসাহ যোগাবে।

ড. জামাল উদ্দিন এবং তার গ্রুপ সোলার সেল থেকে শতকরা ৪৩.৪ পুনঃব্যবহারযোগ্য এনার্জি উৎপাদনে সক্ষমতা অর্জন করেছে যা বিশ্বে এই উৎপাদনের সর্বোচ্চ মাত্রা। ড. জামাল মেটাফিজিঙ্ক সফট ওয়ার-কমসল এবং পিসি-ওয়ান ডি ব্যবহার করে এই ক্ষেত্রে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়লেন।

ড. জামালের মতে, ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই তারা এই এনার্জি উৎপাদন শতকরা ৫০ ভাগে উন্নীত করতে সক্ষম হবেন। এই গবেষণাকল্পে প্রণোদনা স্বরূপ ম্যারীল্যান্ড ট্যাকনোলজী ডেভেলোপমেন্ট কর্পোরেশন গত জুলাই ২০০৯-এ ৮৯,০০০ ডলার প্রদান করেন। আগামী ২৬ অক্টোবর ড. জামালের নেতৃত্বে এই কপিনের গবেষণা দল ম্যারিল্যান্ডের ফোর্ট ডেট্রিক আর্মি রিসার্চ ল্যাবে খ্যতিমান নেনোট্যাক সাইন্টিস, স্কলারস এবং ভিজিটরসদের সামনে তাদের উদ্ভাবনী বিষয়টি উপস্থাপন করবেন।

ড. জামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের মরহুম আব্দুল জলিল ও বেগম ফজিলাতুন্নেছার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান ড. জামাল। বর্তমানে তার পরিবার রাজধানীর ১৯৮ নং এলিফ্যান্ট রোডে বসবাস করছে।

ড. জামালের সহোদর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিজ) সিনিয়র রিচার্স ফেলো ড. এম জসিমউদ্দিন ইত্তেফাককে বলেন, ছোটবেলা থেকে তার ভাই অসম্ভব মেধাবী ছিলেন। তার এই সাফল্য পুরো বাংলাদেশের।

সময় মেপে ঘুরবে প্যানেল

Tuesday, June 19, 2012

 বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়িয়ে কিভাবে বাংলাদেশের যন্ত্রণাদায়ক বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা যায়?

 বিদ্যুৎ উৎপাদন না বাড়িয়ে কিভাবে বাংলাদেশের যন্ত্রণাদায়ক বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা যায়?

প্রথমেই বলে রাখি এই পোস্টটি একটি গবেষণামুলক পোস্ট যাতে বাংলাদেশের চলমান বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক সুদীর্ঘ ভূমিকাটুকু পড়বেন এবং শেষে আপনার নিজেস্ব মন্তব্যটি দিবেন।

বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। লোড শেডিং যা আমাদের দেশের সারা বছরের অনাকাংক্ষিত সঙ্গী। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে লোড শেডিং এর কারণে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। আর তাই এর হাত থেকে বাঁচতে আমাদের প্রচেষ্টারও শেষ নেই । এখন গড়ে ৭-৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকা বেশ স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিনত হয়েছে। তার চেয়ে বড় সমস্যা শৃঙ্খলহীন লোডশেডিং যা পিক আওয়ারে প্রতি ২০-৩০ মিনিট পর পর যাতায়াত করে থাকে । ফলে অসহ্য একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে । বর্তমান বাংলাদেশের এই জাতীয় সমস্যার কারনে বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান এদেশ থেকে ব্যাবসা সম্প্রসারনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে এবং নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে ফলে বিদেশী বিনিয়োগ কমে আসছে। যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

কেন এই সমস্যা?
এই মারাত্মক সমস্যাটি সৃষ্টির প্রধান কারণ হচ্ছে সময়োপযোগী পদক্ষেপ না নেওয়া এবং দূরদর্শিতার অভাব। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও, ভাঙচুর হচ্ছে তার কারন বিশৃঙ্খল বিদ্যুৎ প্রনয়ন ব্যাবস্থা এবং সাধারন গ্রাহকের সাথে দূরত্ব বৃদ্ধি। ফলে দিনে অসংখ্য বার লোডশেডিং হচ্ছে। স্বভাবতই সাধারন গ্রাহক
রাগান্বিত হচ্ছেন। সত্যি বলতে কি আমিও এর ব্যাতিক্রম নই।  এছাড়াও আমাদের জাতীয় বাজেটের বিভিন্ন খাতে উচ্চ প্রত্যাশা এবং বাংলাদেশের ৫ বছর মেয়াদী সরকার ব্যাবস্থার কারনে দীর্ঘ মেয়াদী বিদ্যুৎ প্রকল্প গুলো সক্রিয় করন ও বাস্তবায়নের থেকে সরকার অনেকটা উদাসীন মনোভব দেখায়। ফলশ্রুতিতে বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় এই প্রকল্প গুলো স্থবির হয়ে পরেছে। আপনি যদি বিদ্যুৎ বিভাগের কোন কর্মকর্তা হন তবে হয়তো ভাবছেন সুশৃঙ্খল বিদ্যুৎ প্রনয়ন ও গ্রাহকের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করলেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? তবে আমি বলব নিশ্চয়ই, সঠিক ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করা যায় অনুগ্রহ করে বিস্তারিত পড়ুন।

যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে
বাংলাদেশের বিদ্যুৎবিভ্রাট কী পরিমাণ প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা আর বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদে জানতে পারলাম জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে বিদ্যুৎ সমস্যাকে দায়ী করেছে আর করবেনাই বা কেন সত্যি কথা বলতে কি আমি যেই পোস্টটা লিখছি তা লিখতে পুরো ১ দিন সময় লেগেছে যাই হোক ফলে সরকার আলাদা ভাবে জাপান সিটি স্থাপন করার কথা বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ব্যাবসা লাভজনক একথা কারো অজানা নয় কারন অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে শ্রমের মুল্য অনেক কম, অন্যান্য দেশের তুলনায় উচ্চ মানের সরকারি ট্যাক্স জটিলতা নেই এবং সরকারিভাবে অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু এত সব সুবিধা থাকার পরেও ব্যবসার মুল শক্তি বিদ্যুৎ সমস্যার কারনে শুধু জাপান নয় অনেক বিদেশী সংগঠন এদেশে ব্যাবসা সম্প্রসারনে নিরুৎসাহিত হতে বাধ্য হচ্ছে।

বিকল্প ব্যাবস্থার মাধ্যমে এর সমাধান কি সম্ভব?
বিকল্প ব্যাবস্থা হিসেবে প্রথমে সৌরবিদ্যুৎ এর কথা বলি, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ওয়াটের মূল্য প্রায় ২.০ ডলার। বিকল্পভাবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করারও অনেক জটিলতা রয়েছে কারণ বর্তমান মূল্যে এক মেগাওয়াট ডিজেল বা ফার্নেস অয়েলচালিত জেনারেটরের দাম প্রায় ৩.০-৩.৫ কোটি টাকা। এই মূলধনের খরচসহ ডিজেলচালিত জেনারেটরে বিদ্যুতের দাম পড়বে ১০-১২ অর্থাৎ বর্তমান পিডিবির বিদ্যুতের দামের গড়ে প্রায় তিন গুন এবং একই ভাবে গ্যাসের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ এর মূল্য বর্তমান মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হবে। ফলে সরকারকে প্রচুর ভর্তুকি দিতে হবে। এছারাও অন্যের কাছ থেকে বিদ্যুৎ ধার করার একটি সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু আমাদের দেশের এক তৃতীয়াংশ বর্ডারের অবস্থান নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতেও বিদ্দুতের উৎপাদন পর্যাপ্ত নয়। তবে যতদূর জানি বর্তমান সরকার উচ্চ মূল্যে ভুটান ও ভারত থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছে।

বিদ্যুৎ সমস্যা লাঘবে করনীয় কি?
বাসায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো এবং সাধারন মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপচয় রোধ করা গেলে বিদ্যুৎ সমস্যা কিছুটা লাঘব হবে কিন্তু তাতে করে অনিয়ন্ত্রিত ব্যাবস্থার কারনে বিদ্যুতের সুষম বণ্টন সম্ভব হবে না।

চলুন এখন সমাধানের জন্য মুল প্রসঙ্গে আসি আমাদের দেশের উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিভাবে সুশৃঙ্খল ভাবে বণ্টন করা যায় এবং দিনে অসংখ্য বার লোডশেডিং এর হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়?
বর্তমান বিদ্যুৎ সমস্যায় সৃষ্ট জনদুর্ভোগ নিরসনের একটি মারাত্মক সমাধান রয়েছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনেক বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট বসিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ানো একটি দীর্ঘ মেয়াদী ও প্রচুর ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু বিদ্যুত উৎপাদন না বাড়িয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের সঠিক বণ্টনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে এক নিমেষেই পরিত্ত্রান পাওয়া সম্ভব

১, প্রথমে আমাদের প্রতিটি বৈদ্যুতিক প্ল্যান্টের উৎপাদন মাত্রা আলাদা ভাবে নির্ণয় করতে হবে।
২, আলাদাভাবে প্রতিটি বৈদ্যুতিক প্ল্যান্টের গ্রাহকসংখ্যা গননা করতে হবে।
৩, বিদ্যুৎ ব্যাবহারের সময়সীমা ( পিক আওয়ার ও অফ পিক আওয়ার ) সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে।
৪, External Electric Meter Maintaining Device যুক্ত করা
৫,গ্রাহকদের জন্য এক ধরনের Indoor Electric Meter Maintaining Device তৈরি করতে হবে।
6,সঠিকভাবে প্রক্রিয়াটিকে পরিচালনা করতে হবে।

প্রথমের তিনটি ধাপ সম্পর্কে বিদ্যুৎ বিভাগ খুব ভালভাবে দক্ষতার পরিচয় রাখেন। ৪ ও ৫ নম্বর ধাপটি নতুন কিন্তু ৬ নম্বর ধাপটি সঠিকভাবে পালন না করার জন্য সারা দেশের মানুষকে অনিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সন্মুখিন হতে হচ্ছে। তাই আমি যতটা সম্ভব সহজভাবে আপনার কাছে ৪,৫ ও ৬ নং ধাপগুলো উপস্থাপন করার চেষ্টা করছিঃ-

External Electric Meter Maintaining Device কি?
External Electric Meter Maintaining Device ( EEMMD )হচ্ছে একটি ডিভাইস যা একটি প্ল্যান্টের উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমান এবং গ্রাহক পর্যায়ে Indoor Electric Meter Maintaining Device এর মাধ্যমে ব্যাবহারের চাহিদাকে রিড করতে পারবে । অর্থাৎ কি পরিমান বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে এবং তার প্রেক্ষাপটে কতটুকু ব্যয় হচ্ছে সে সম্পর্কে External Electric Meter Maintaining Device স্পষ্ট ধারনা রাখবে।

Indoor Electric Meter Maintaining Device কি ?
Indoor Electric Meter Maintaining Device ( IEMMD ) হচ্ছে গ্রাহকের বর্তমান মিটারের সাথে যুক্ত একটি সাধারন ডিভাইস যা মুল প্লান্টে অবস্থিত EEMMD এর নির্দেশ অনুসরণ করবে এবং গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ ব্যাবহারের সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা প্রেরন করবে। IEMMD তে ডিজিটাল সিগন্যাল বাতি ও একটি সুইচ থাকবে এটি দেখতে ডিজিটাল ঘড়ীর মত। গ্রহক EEMMD থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পিক আওয়ার এবং অফপিক আওয়ারে পছন্দ মত সময়ে লোডশেডিং নিতে পারবে।
EEMMD ও IEMMD এর মাধ্যমে কিভাবে বিদ্যুৎ এর সুষম বণ্টন করা যায়?
ধরি, আমাদের একটি প্ল্যান্ট “A” এর গ্রাহক সংখ্যা ১০০০০ জন এর জন্য প্রতিদিন ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে গড়ে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে অর্থাৎ প্রতিদিন এই প্লান্টে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয়। এই ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এর সময় ধরি টানা ১ ঘন্টা।
এখন এই ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পুরনের জন্য এই ১০০০০ জন গ্রাহকের বাসায় IEMMD যুক্ত করা হল।
প্লান্টে অবস্থিত EEMMD ডিভাইসকে পিক আওয়ার এবং অফপিক আওয়ার সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হল। ধরি, অফপিক আওয়ার রাত্রি ১২ টা থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত এবং পিক আওয়ার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত্রি ১০ টা পর্যন্ত।
এখন EEMMD এই ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণের জন্য IEMMD ডিভাইসকে অর্থাৎ গ্রাহকের ডিভাইসকে পিক আওয়ারে গ্রাহকের পছন্দ মত সময়ে লোডশেডিং দেয়ার নির্দেশ দেবে। ইমারজেন্সি লাইটটি সবসময় গ্রাহককে বর্তমান চাহিদা সম্পর্কে হলুদ, সবুজ, লাল বাতির মাধ্যমে ধারনা দেবে। ধরুন বর্তমান রিজার্ভ বাড়ছে অর্থাৎ গ্রাহকের ডিভাইসে সবুজ বাতি, যখন চাহিদার পরিমান বাড়বে তখন হলুদ, এবং উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অতিক্রম করলে লাল বাতি জ্বলবে। এতে করে স্বভাবতই একজন গ্রাহক জরুরী অবস্তায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের চেষ্টা করবে।
EEMMD
IEMMD গ্রাহকের স্ক্রিনঃ
অফপিক আওয়ার= ১ ঘন্টা
পিক আওয়ার=১ ঘণ্টা
ইমারজেন্সি= যেকোনো সময়
পাওয়ার= অন/অফ

সহজ কথায় আপনার IEMMD ডিভাইসে উল্লেখিত পিক আওয়ারে যদি ১ ঘন্টা উল্লেখ থাকে তবে পিক আওয়ারে আপনার পছন্দ মত সময়ে নির্দিষ্ট পরিমান ( EEMMD প্রদত্ত ) সময় ডিভাইসের পাওয়ার অফ করে লোডশেডিং দিতে বাধ্য থাকবেন। অন্যথায় স্বয়ংক্রিয় বর্তমান অবস্থার মত আপনার লোডশেডিং হবে। এছাড়াও ইমারজেন্সি ভাবে যেকোনো সময় IEMMD লোডশেডিং দিতে পারবে।

IEMMD এর সুবিধা কি?
১, এর মাধ্যমে আপনার ঘরে বিদ্যুৎ কখনো হটাৎ করে চলে যাবেনা।
২, আপনি আপনার পছন্দ মত সময়ে লোডশেডিং নিতে পারবেন।
৩, ব্যাবসায়ীরা তাদের কাজের সময় সম্পর্কে সচেতন থাকবে।
৪, বিদ্যুৎ সাস্রয়ে সকলেই সতর্ক হবে।
৫, বিদ্যুৎ অফিস ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলা কমে যাবে।
৬, আপনার ইলেক্ট্রনিক্সের জিনিসপত্রের আয়ু বাড়বে।
৭, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন শান্ত হবে।
৮, ধীরে ধীরে জাতীয় গ্রেডে নতুন বিদ্যুৎ সংযোজন হলে তা আরও সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।
৯, অফ পিক আওয়ারে সৃষ্ট লোডশেডিংএ একটি ভাল রিজার্ভ গড়ে উঠবে যা কৃষি কাজ যেমন ডিপ, মোটার ও অন্যান্য কাজের জন্য সহায়ক হবে।
১০, পছন্দ মত সময়ে লোডশেডিং হলে শিল্প কারখানায় ঐ সময়ে পরিকল্পিত ভাবে ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

এই এক পাতায় এত বড় একটি সমস্যার সমাধান বিস্তারিত ভাবে দেওয়ার অবকাশ নেই তার পড়েও চেষ্টা করলাম যতটুকু সম্ভব উপস্থাপন করার। আপনার এ সংক্রান্ত কোন মন্তব্য থাকলে নিম্নে লিখুন। আর ভাল লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ আপডেট মঙ্গলবার, ০৫ জুন ২০১২ ১৫:১৪
Written by :
শাহ সুলতান রনি

Source: http://www.banglahili.com

সৌর ব্যাবহারের ৭টি কারণ

সৌর ব্যাবহারের ৭টি কারণ

পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি, সৌর ব্যবহারের আর কোন কারণ আছে কী? সৌর ব্যবহারের মামাবিধ কারণগুলো জানলে আপনি অবাক হবেন।
  1. বিদ্যুৎ চলে গেলে এটি আপনি  বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে লোডশেডিং বেড়ে যায়, সে সময় বাড়িতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকলে, আপনি লোডশেডিং-এর সময়ও বিদ্যুতের ব্যবহার চালু রাখতে পারবেন।
  2. সৌর ব্যবস্থার খরচ ক্রমেই হাতের নাগালে চলে আসছে -- বিগত দশকের প্রতিটি বছরেই  সৌর বিদ্যুতের  মূল্য ৩.৫% হারে কমে এসেছে ।
  3. বাংলাদেশে এটিই সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শক্তির উৎস -- পানিবিদ্যুত এবং বাতাস সামান্য কিছু শক্তি সরবরাহ করতে পারে, কিন্তু সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থার অসীম।
  4. Solar panels last সৌর প্যানেলের স্থায়ীত্ত -- বেশিরভাগ বিদ্যুৎ  প্যানেল ২৫ বছর বা তার বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে থাকে। কিন্তু একটি সোলার প্যানেল তৈরি করার পিছনে যে শক্তি ব্যয় হয় তা  দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে প্রাকৃতিক শক্তিতে রুপান্তর হয়।  
  5. এটি আইপিএস সিস্টেমের চেয়ে ভাল একটি বিকল্প ব্যবস্থা। -- আইপিএস এবং সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা-দুটোই খরচসাপেক্ষ, কিন্তু আইপিএস নতুন করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম নয় যা সৌরশক্তি দ্বারা সম্ভব, আইপিএস বিদ্যুতের ঘাটতি পূরন করতে পারে না, কিন্তু সৌরশক্তি দ্বারা সবসময় নতুন ও পরিচ্ছন্ন শক্তি তৈরি করা যাচ্ছে।
  6. কেবল ৪০ ভাগ বাংলাদেশী নাগরিক বিদ্যুৎ গ্রীডের আওতাই আছে -- যারা জাতীয় বিদ্যুতের আওতায় নেই, তাদের জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা একটি সর্বোত্তম পন্থা।  বাংলাদেশের জনপ্রতি এনার্জি ব্যবহার এর হার প্রায় (১৩৬ কিলোওয়াট-আওয়ার) সেখানে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা একটি আশীর্বাদ স্বরূপ।
  7. এটি আই.পি.এস. এর চাইতে অনেক বেশি এফিশিয়েন্ট/কার্যকর: আই.পি.এস.-এ বিদ্যুতকে তিনবার DC থেকে AC-রুপান্তরিত করা হয়, এবং প্রত্যেকবারই খানিকটা করে বিদ্যুতের অপচয় হয়। কিন্তু একটি সোলার সিস্টামের ক্ষেত্রে, একটি সম্পূর্ণ DC সিস্টাম রাখা যায়। 
chart
প্রতিবেদন:
- আমাদের পণ্যের তথ্য
- আপনার গৃহস্থালির চাহিদা পূরণে সহায়ক


Source: http://www.parasol-energy.com/bn/

সৌরশক্তিচালিত মোটরসাইকেল উদ্ভাবন করেছে মাগুরার জুবায়ের।

সৌরশক্তিচালিত মোটরসাইকেল উদ্ভাবন করেছে মাগুরার জুবায়ের।

ট্রাফিক আইন সহায়ক, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব নতুন ধরনের মোটরসাইকেল উদ্ভাবন করেছেন মাগুরা শহরের পারনান্দুয়ালী এলাকার যুবক জুবায়ের হোসেন। জ্বালানি তেলের বদলে তাঁর মোটরসাইকেলটি চলবে সৌরশক্তি ও বাতাসের সাহায্যে। জুবায়ের তাঁর উদ্ভাবিত মোটরসাইকেলের নাম দিয়েছেন ডিজিটাল ইজি সাইকেল। এটি এমন একটি স্বয়ংক্রিয় যৌথ সার্কিটের মাধ্যমে পরিচালিত, যার ফলে মোটরসাইকেলটি একটি বিশেষ ধরনের হেলমেট ছাড়া স্টার্ট নেবে না। যা মোটরসাইকেল চুরি প্রতিরোধ করবে এবং ট্রাফিক আইনের সহায়ক হবে। এটির ডিজাইন করা হয়েছে অনেকটা জাপানি হোন্ডা ফিফটি সিসি মোটরসাইকেলের মতো। তেলে না চলায় মোটরসাইকেলে কোনো ধোঁয়া হয় না। এটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। এতে কোনো শব্দ হয় না, যার ফলে এটি পরিবেশবান্ধব।

মোটরসাইকেলটির দুই পায়ে দুটি ব্রেক আছে। এ ছাড়া সাইকেলটিতে বৈদ্যুতিক এক্সেলেটর স্থাপন করা হয়েছে। এটিতে কোনো গিয়ার দেওয়া হয়নি। গোটা সাইকেলে ১২ ভোল্টের তিনটি ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে দুটি ব্যবহৃত হয় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন-শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত মোটরটি চলতে, অপরটি ব্যবহৃত হয় হর্ন, বাল্ব, সিগন্যাল দেওয়ার জন্য। সাইকেলের সামনের দিকে হেডলাইট এলাকায় ছোট আকৃতির বৈদ্যুতিক ফ্যানের আকারে তিনটি পাখা আছে। মোটরসাইকেলটি চললে পাখা তিনটি সজোরে ঘুরতে থাকে। যার বাতাস থেকে তৈরি হয় শক্তি। মোটরসাইকেলের প্রতিটি ব্যাটারিই সচল হয় এটির সঙ্গে সংযুক্ত সৌর প্যানেল ও সামনের দিকে থাকা পাখার ঘূর্ণায়মান বাতাস থেকে পাওয়া শক্তি ও জমা হওয়া চার্জ থেকে। সব ব্যাটারির সঙ্গেই সামনের দিকে থাকা পাখা ও সৌর প্যানেলের সংযোগ দেওয়া আছে। মোটরসাইকেলটিতে একটি গিয়ার বক্সের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের একটি সার্কিট সংযুক্ত আছে। যার ফলে যখনই মোটরসাইকেলটিতে চলন্ত অবস্থায় ব্রেক করা হয় কিংবা ঝাকি তৈরি হয় তখন ওই সার্কিটের সঙ্গে সংযুক্ত পেনিয়ামে ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ তৈরি হয়, যা তারের মাধ্যমে ব্যাটারিতে চার্জ হিসেবে জমা হয়।

মোটরসাইকেলটিতে কোনো প্রচলিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়নি। এক হর্স পাওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ডিসি ভোল্টের মোটরকে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই মোটরের সঙ্গে চেইনের মাধ্যমে চাকার সংযোগ আছে। মোটরটি চলে ব্যাটারির শক্তিতে। যেহেতু ট্রাফিক আইন অনুযায়ী মোটরসাইকেলে দুজন চড়া আইনসংগত, সেহেতু জুবায়েরের মোটরসাইকেলটিতে সর্বোচ্চ দুজনই চড়তে পারবে। এজন্য মোটরসাইকেলটিতে এমন একটি স্বয়ংক্রিয় সুইচ যুক্ত করা আছে, যা প্রাপ্তবয়স্ক দুজনের অতিরিক্ত ব্যক্তি চড়লেই ওই সুইচটির মাধ্যমে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে।
এ ছাড়া এটি চালানোর জন্যে মোটরসাইকেলের সঙ্গে জুবায়েরের নিজের তৈরি একটি বিশেষ ধরনের হেলমেট নিতে হবে। এ হেলমেটে এমন একটি সার্কিট দেওয়া আছে, যার ফলে হেলমেটটি নিয়ে মোটরসাইকেলে না উঠলে স্টার্ট নেবে না। কোনো কারণে হেলমেটটি অকার্যকর হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে রিমোটের মাধ্যমে এটি স্টার্ট করা যাবে। এ রিমোটটি একইভাবে জুবায়ের তাঁর নিজস্ব কারিগরি মেধায় তৈরি করেছেন।

প্রায় প্রতিদিনই জুবায়েরকে এই মোটরসাইকেলযোগে শহর ও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে। তাঁর মোটরসাইকেলটি কোথাও থামলে সব সময় উৎসুক মানুষ এটি ঘিরে ভিড় করে। প্রত্যেকেই তাঁর এ উদ্ভাবনকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
জুবায়ের জানান, ঢাকার একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করা অবস্থায় ২০০০ সালে সৌর ও বায়ু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের মোটরসাইকেল তৈরির পরিকল্পনা তিনি মাথায় নেন। দীর্ঘদিন চেষ্টার পর গত বছর তিনি এটি তৈরি করতে সক্ষম হন। এটি তৈরিতে মোট খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তবে ব্যাপক উৎপাদনে গেলে এটির খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন। এজন্য তিনি সরকারি কিংবা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আশা করেন। জুবায়ের জানান, তাঁর এ প্রযুক্তি নিয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জিয়াউর রহমানের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি এটি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে গাড়ির ওজন কমানো, ডিজাইনে নতুনত্ব আনা ও গতি কিছুটা বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। [খবর: কালের কন্ঠের]

জুবায়েরকে আমাদের অভিনন্দন। সেই সাথে সরকার, বুয়েট, প্রগতি, এটলাস বাংলাদেশ, ওয়ালটন, মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী সবার কাছে আহবান, ছোট দেখে হেলা করবেন না। এই বিশাল সৃষ্টিকে জনকল্যানে কাজে লাগান।

Source: Facebook

জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারে রাইহান

জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারে রাইহান

এমরানা আহমেদ
জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন বাংলাদেশী বিজ্ঞানী রাইহান উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার সূত্রের একটি গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছেন, যা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাস্তবসম্মত বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
রাইহান আহমেদের জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন মূলত দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত।
একটি অংশ অরবিটকে, যা কক্ষপথের সঙ্গে এবং অপর অংশ ক্যারিয়েজকে, যা অক্ষের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ১৬টি শ্যাফট একটার ওপর একটা নির্দিষ্ট মাপে সাজিয়ে গঠন করা হয়েছে ক্যারিয়েজ। ১৩টি গোলাকার ফিক্সচার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে অরবিট। যন্ত্রে মোট দুটি অরবিটকে একটির ওপর আরেকটি সেট করা হয়েছে। প্রতিটি অরবিটের চার পাশে চারটি ক্যারিয়েজ স্থাপন করা হয়েছে। নিজস্ব ভর থেকে ঘুরে শক্তি উত্পাদন করবে ক্যারিয়েজ। ক্যারিয়েজের শক্তি ঘোরাবে অরবিটকে। পরে অরবিটের শক্তিকে বলবৃদ্ধি নীতি প্রয়োগ করে বাড়ানো হয়। এভাবে উত্পন্ন শক্তিতেই চলবে ইঞ্জিন। রাইহান আহমেদ জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির সূত্রের যে গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করিয়েছেন তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ প্যাটেম্লট অফিস। অনেক যাচাই-বাছাই করে ঢাকা প্যাটেম্লট অফিস ২০০১ সালে এ প্রযুক্তিকে প্যাটেম্লট করাতে রাজি হয়। ২০০২ সালে এ প্যাটেম্লট গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির পক্ষ থেকে রাইহান আহমেদের জ্বালানিবহীন ইঞ্জিন তৈরির সূত্র ও তার গাণিত্যিক ভিত্তিকে বাস্তবসম্মত বলে মত দেয়া হয়। প্যাটেন্টের নিয়মানুসারে এ প্রযুক্তি ২০০২ সালে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। গত আট বছরে বিশ্বের কোনো বিজ্ঞানী এ ধরনের ইঞ্জিন তৈরির সম্ভাব্যতা ও সূত্রের গাণিত্যিক ভিত্তি নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেননি।
১৯৮৩ সালে জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির চিন্তা মাথায় আসে রাইহান আহমেদের। তিনি প্রথমে জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরির একটি সূত্র তৈরি ও তার গাণিতিক ভিত্তি দাঁড় করালেন। সূত্রটি হচ্ছে, ‘প্রত্যেক বস্তুর ওজন তার একটি নিজস্ব শক্তি, যা ব্যবহার করে বস্তুটিকে গতিশীল করা যায়।’ তিনি তার সূত্রের নামকরণ করলেন ‘ল অব পার্টিকুলার মেথড’।
ইঞ্জিন তৈরির কাজ শুরু করতেই প্রয়োজন পড়ে বিপুল পরিমাণ অর্থের। গবেষণার প্রয়োজনে একে একে বিক্রি করে দেয়া হলো বেশিরভাগ জমাজমি। কিছু পার্টস তৈরি করতে বেশ কয়েকবার যেতে হয়েছিল ভারতের ওয়ার্কশপে। গবেষণার কাজ এগিয়ে নিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার বন্ধু আবু হানিফ। প্রযুক্তিটি জানাজানি হওয়ায় পাচার বন্ধ করতে সূত্র ও সূত্রের গাণিতিক ভিত্তি ২০০১ সালে ঢাকা প্যাটেম্লট অফিস থেকে প্যাটেম্লট করিয়ে নেয়া হয়।
রাইহান আহমেদ এ গবেষণার পেছনে তার প্রায় সব সম্পদ ব্যয় করেছেন।
সূত্র ও গাণিতিক ভিত্তি অনুসরণ করে তিনি একটি জ্বালানিবহীন ইঞ্জিন তৈরির কাজও অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। তবে তার এই যন্ত্রের চূড়ান্ত রূপ দিতে এখন প্রয়োজন ন্যানো টেকনোলজির কম্পিউটারচালিত যন্ত্রপাতি এবং বিপুল অর্থের। এ দুটির কোনোটিই না থাকায় তার এ গবেষণাকর্ম এখন থেমে আছে।
রাইহান আহমেদ জানান, আমার বয়স হয়েছে। আমি চাই একদল তরুণ গবেষক এ গবেষণায় অংশ নিক। ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ তৈরি করতে ন্যানো টেকনোলজির কম্পিউটারচালিত যন্ত্রের প্রয়োজন। অংশগুলোর মাপ সূক্ষ্মতম পরিমাণ কমবেশি হলে ইঞ্জিন কাজ করবে না। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাই কেবল পারে এ গবেষণাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। এ গবেষণা থেকে আমি কোনো আর্থিক লাভ চাই না। আমি চাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। জ্বালানিবিহীন ইঞ্জিন তৈরি সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের একটি বিস্ময় এবং প্রযুক্তিটির রয়্যালটি বাবত দেশ যা আয় করবে তাতে সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন এই উদ্ভাবক।

ট্রান্সফরমার চুরি রোধে দেশীয় প্রযুক্তি

ট্রান্সফরমার চুরি রোধে দেশীয় প্রযুক্তি মনজুরুল আহসান আমাদের দেশে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা দামের ট্রান্সফরমার চুরি হয়। একেকটি ১০ কেভির বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের মূল্য ৪০ হাজার টাকারও বেশি। ট্রান্সফরমার চুরি যাওয়ার খেসারত দিতে হয় গরিব কৃষকদের। কখনো বা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড বা সরকারের ঘাড়ে চাপে এর দায়ভার। এ ছাড়া নতুন ট্রান্সফরমার স্থাপন করে পুনরায় বিদ্যুৎ পেতেও অনেক সময় লেগে যায়। ফলে সেচকাজ বিঘি্নত হওয়াসহ নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় কৃষকদের।
পত্রপত্রিকায় এই সংবাদ দেখে ট্রান্সফরমার চুরি রোধে অনুপ্রাণিত হন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের (এআইইউবি) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অসীম কুমার সাহা। তাঁর প্রাথমিক ধারণা ছিল, এমন একটি ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা, যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ব্যক্তি ট্রান্সফরমার খোলার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষে সতর্ক বার্তা পেঁৗছে যায়। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে উদ্যোগ নিয়ে ট্রান্সফরমার উদ্ধার এবং দুর্বৃত্তদের ধরার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীদের সেখানে পাঠাতে পারে_এমন প্রযুক্তি নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করলেন। এ ধরনের একটি প্রযুক্তির কারিগরি উন্নয়নের জন্য তিনি শেষ বর্ষের তিন শিক্ষার্থীকে প্রজেক্ট ঠিক করে দিলেন। 'ট্রান্সফরমারের নিরাপত্তায় নিয়ন্ত্রণকক্ষে সতর্ক বার্তা পাঠানো' শিরোনামে এই প্রজেক্টে কাজ করেছেন অসীম কুমার সাহার তিন শিক্ষার্থী সিজা আফরিন, আলেয়া ফেরদৌসি এবং তানভীর আহমেদ চৌধুরী। দেশের একটি সমস্যার সমাধানে কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণাগারগুলোর অবদানের শুরুর গল্পটা এ রকমই।
নব উদ্ভাবিত এ ব্যবস্থাটিতে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন এই গবেষকরা। একটি মোবাইল ফোন সংস্কার করে ট্রান্সফরমারের মধ্যে বিশেষভাবে বসানো হয়। এতে এমন একটি ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে কেউ ট্রান্সফরমার খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্ক বার্তা চলে যাবে। যতক্ষণ নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ না হবে এবং তারা উদ্যোগ না নেবে, ততক্ষণ অনবরত সতর্ক বার্তা দিতে থাকবে। এ প্রসঙ্গে প্রজেক্ট তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণকক্ষে অ্যালার্ম ধরনের ব্যবস্থা করা যাবে। এতে নিয়ন্ত্রণকক্ষে কর্মীদের মনিটরের দিকে না তাকিয়েও শব্দ শুনে বুঝবেন কোথাও ট্রান্সফরমার খুলে ফেলা হচ্ছে।'
গবেষণার সফলতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এআইইউবির তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুর রহিম মোল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একাধিকবার গবেষণাগারে পরীক্ষা করে তা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।' এ উদ্ভাবনের সম্ভাবনার দিক তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর ট্রান্সফরমারে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলে বছরে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি ভোক্তাদের ভোগান্তিও কমবে।'
প্রজেক্টের অন্যতম গবেষক তানভীর আহমেদ জানান, প্রথম সফল এ রকম একটি ব্যবস্থা প্রস্তুত করতে সাকল্যে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৮৬৬ টাকা। বাণিজ্যিকভাবে এর উৎপাদন শুরু করলে এই ব্যয় এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় নেমে আসবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রযুক্তিটির উদ্ভাবক এবং সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, যে সমস্যা সমাধানের জন্য এই সফল গবেষণার উদ্যোগ, সেখানে এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে দ্রুত সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন।
নব উদ্ভাবিত এ প্রযুক্তির বিষয়টি জানানো হলে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানির প্রকৌশল বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী সিরাজদ্দৌলা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রজেক্টটি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর যদি সফল প্রমাণিত হয়, তাহলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এটা সেখানে ব্যবহার করতে পারলে চুরি প্রতিরোধ করা যাবে।' এই প্রযুক্তিটির আরো উন্নয়ন কার্যকর করার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিজেদেরই এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রকৌশল বিভাগের সদস্য প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন তরুণদের এই উদ্ভাবনের সংবাদ শুনে প্রযুক্তিটি নিরীক্ষার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দেশেই এ ধরনের উদ্ভাবন নিজস্ব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
Source: Daily Kalerkantho, 08-10-10

সমুদ্রের উষ্ণতা থেকে বিদু্যৎ উৎপাদনের উদ্যোগ

সমুদ্রের উষ্ণতা থেকে বিদু্যৎ উৎপাদনের উদ্যোগ

জ্বালানির জন্য বিকল্প শক্তি ব্যবহারের ভাবনা মানুষের নতুন নয়। কিন্তু বাস্তবে কেউ তা করতে পারছে আর কেউ পারছে না। জার্মানির মত দেশে বিদু্যতের মূল্য যেভাবে বেড়ে চলেছে, তার ফলে এইসব বিকল্প পথে সেখানে বিদু্যৎ উৎপাদনের আগ্রহ বাড়ছে। যেমন সমুদ্রের উত্তাপ থেকে বিদু্যৎ উৎপাদনের কথা ভাবা হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা সাধারণত ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার থেকে বেশি। অন্যদিকে ১,০০০ মিটার গভীরে তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এই দুই স্তরের মধ্যে তাপমাত্রার ব্যবধান ২০ ডিগ্রিরও বেশি। ঠিক এই পার্থক্যকে কাজে লাগিয়েই বিদু্যৎ উৎপাদন করা সম্ভব। -খবর ডয়চে ভেলের।

এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে যারা কাজ করছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের আধা-সরকারি জাহাজ নির্মাণ সংস্থা ডিসিএনএস। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় 'ওশান থার্মাল এনার্জি কনভার্শন' বা 'ওটেক'। বিদু্যৎ উৎপাদনের পদ্ধতিও বেশ সহজ। প্রথমে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি পাইপের মধ্য দিয়ে সমুদ্রের গভীরের ঠাণ্ডা পানি সমুদ্রপৃষ্ঠে পাম্প করা হয়। এই পানি এক বিশেষ ধরনের গ্যাসকে তরল পদার্থে পরিণত করে। সবশেষে এই তরল গ্যাস সমুদ্রপৃষ্ঠের গরম জলের সংস্পর্শে এসে ফুটতে থাকে। এই প্রক্রিয়া চালু রাখলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার টার্বাইন বা বিশাল চাকা ঘোরানো সম্ভব। কয়লার সাহায্যে তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রেও প্রায় একই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদু্যৎ উৎপাদন করা হয়।

তবে 'ওটেক'-এর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা অনেক কম থাকে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় কোনোরকম কার্বন-ডাই-অক্সইডের নির্গমণ ঘটে না। ফলে এই প্রযুক্তি সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব। ডিসিএনএস'এর প্রতিনিধি এমানুয়েল ব্রশার এ সম্পর্কে বলেন, বায়ুশক্তি বা সৌরশক্তির ক্ষেত্রে সবসময়ে বিদু্যৎ উৎপাদন সম্ভব নয়? কখন বাতাস বইবে বা কখন রোদ উঠবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অথচ সমুদ্রের এই শক্তি কাজে লাগিয়ে একটানা বিদু্যৎ উৎপাদন করা যায়। এটা একটা বিশাল সুবিধা।

বাস্তবে প্রয়োগ:গত শতাব্দীর আশির দশকেই সমুদ্রশক্তি চালিত বিদু্যৎ উৎপাদনের উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। বেশ কিছু প্রোটোটাইপ বা প্রাথমিক যন্ত্রও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে তেলের দাম কম থাকায় খরচে পোষায়নি। এখন তেলের দাম বেড়ে চলায় ও পরিবেশের ক্ষতির কারণে 'ওটেক' পদ্ধতি আবার আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। এমানুয়েল ব্রশার বেশ কিছু বড় আকারের প্রকল্পের কথা জানালেন। তিনি বললেন, ''আমরা প্রাথমিক স্তরে এক কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছি, যা ১০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন করতে পারবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে এক রিপোর্টও তৈরি হয়ে গেছে। এই মডেল প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল আমাদের এই প্রযুক্তির জন্য বিনিয়োগকারীদের মন জয় করা। ২০১৫ সালে আমাদের কেন্দ্র বিদু্যৎ উৎপাদন শুরু করতে পারবে বলে আমরা আশা করছি।

সমুদ্রশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদু্যৎ উৎপাদন করলে সেই এলাকার উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিচ্ছিন্ন যেসব দ্বীপে বিদু্যৎ সরবরাহ করা কঠিন, তাদের জন্য এমন বিদু্যৎ কেন্দ্র সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয়।
Source: Daily Ittefaq

তরুণ বিজ্ঞানী জিয়নের আরও কিছু আবিষ্কার

তরুণ বিজ্ঞানী জিয়নের আরও কিছু আবিষ্কার

আসাদুজ্জামান সাজু
লালমনিরহাটের হাতিবান্ধার মুমতাহিন জিয়ন নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তৈরি করতে থাকে বিভিন্ন প্রজেক্ট। এভাবেই সে উদ্ভাবন করে পারিবারিক বায়ুবিদ্যুত্, পা-চালিত বিদ্যুত্, ঘর শীতলীকরণ যন্ত্র, জ্বালানিবিহীন সেচযন্ত্র ইত্যাদি। আমার দেশ-এ জিয়নের প্রজেক্টগুলো নিয়ে ৩টি প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই তার উত্সাহ দিন দিন বেড়েই চলে।
জিয়ন মনে করেন, প্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রথম আমদানিকৃত পণ্যগুলোর তালিকা এবং তা দেশে উত্পাদনে শিল্পপতিদের উত্সাহিত করাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করতে হবে সরকারকে। প্রযুক্তি যদি জনগণের কল্যাণে না আসে তবে তা বৃথা। এভাবে চিন্তা করতে গিয়েই হঠাত্ মাথায় আসে এনার্জি সেভারের বিষয়টি। দীর্ঘ সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এনার্জি সেভারটি পূর্ণাঙ্গতা পায়। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি পরিবার ২০ থেকে ৩৫ ভাগ বিদ্যুত্ সাশ্রয় করতে পারবে। জিয়নের কয়েকটি প্রকল্প হলো—
বায়ুবিদ্যুত্ প্রকল্প : বায়ুবিদ্যুত্ প্রকল্প সফল করতে পুরনো বাইসাইকেলের বিয়ারিংয়ের সঙ্গে ডায়নামা যুক্ত করে পেনিয়ামের সাহায্যে সেটি বাতাসে ঘুরানোর উপযোগী করা হয়। এরপর সিলিং ফ্যানের পাখা সেট করে পরীক্ষামূলক বাড়ির ছাদে স্থাপন করা হয়। বাতাসে পাখা ঘুরে ডায়নামো দিয়ে বিদ্যুত্ উত্পন্ন হয়ে ব্যাটারি চার্জ হয়।
পা-চালিত বিদ্যুত্ প্রকল্প : জিয়নের পা-চালিত বিদ্যুত্ প্রকল্পটি দিয়ে আধাঘণ্টা ব্যায়াম করার ফলে একটি পরিবার ৩ ঘণ্টা বিদ্যুত্ পেতে পারে।
ঘর শীতলীকরণ যন্ত্র : সুতো পানির ব্যবহারে বিদ্যুত্চালিত এ যন্ত্রটি কিছুক্ষণের মধ্যে ঘরকে শীতল করে ফেলে। এর বিদ্যুত্ খরচ সাধারণ একটি ফ্যান চালানোর চেয়ে বেশি নয়। এ কারণে একটি মধ্যবিত্ত পরিবার তার ঘরটি শীতল রাখতে এটি সহজ মূল্যে কিনতে পারবে।
জ্বালানিবিহীন পানি উত্তোলন যন্ত্র : মূলত বায়ুর চাপে এটি কাজ করে। রিফ্লেকটরের সাহায্যে সূর্যের তাপে এটিকে বায়ুশূন্য করে পরবর্তী সময়ে শীতলীকরণের মাধ্যমে নিচ থেকে পানি উপরে ওঠে আসে এবং তা স্বল্প সেচ কাজে ব্যবহার করা যায়। জিয়নের পড়াশোনার পুরোটাই কেটেছে সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেও ইন্টারনেটের বদৌলতে বিশ্বকে নিয়েছে হাতের মুঠোয়। হাতিবান্ধা এসএস উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞান সবার মাঝে পৌঁছে দিতে ক’জনে মিলে বের করে ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কম্পিউটার টেকনোলজি নামক একটি পত্রিকা। তাতে সে সহকারী সম্পাদকের ভূমিকা পালন করে। জিয়নের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পেটি অফিসার, মা গৃহিণী। জিয়ন খুদে বয়সে ন্যাশনাল মিডিয়া সেন্টার, কিডস জোন ও টেকনোলজিবেজের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। জিয়নের  মোবাইল : ০১৭১৯৪০২০০২

Monday, June 18, 2012

বায়ু বিদ্যুৎ

বায়ু বিদ্যুৎ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে


তিন পাখাবিশিষ্ট বায়ুকল
বায়ু বিদ্যুৎ, বায়ু শক্তি হতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ। বাযুপ্রবাহ হতে ঘোরা বিশাল আকারের পাখা দ্বারা টারবাইন ঘুরিয়ে এই বিদ্যুত উৎপাদন করা হয়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত পৃখিবীব্যাপি ১২১.১ গিগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনের নথি পাওয়া যায়। পৃথিবীর মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১.৫ শতাংশ বায়ুবিদ্যুৎ। পূণর্ব্যবহারোপযোগী ও জ্বালানিবিহীন হওয়ায় এর উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউরোপের ডেনমার্ক, জার্মান, স্পেন, পর্তুগাল, সুইডেন প্রভৃতি দেশে এর ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। মে ২০০৯ পর্যন্ত বিশ্বের ৮০টি দেশে বাণিজ্যিকভাবে বায়ুবিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে।
বায়ুর গতি ঘন্টাপ্রতি কমপক্ষে ৭-১০ মাইল হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

কুতুবদিয়া বায়ু বিদ্যুৎ স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন দিনের 

 

99989_1।। রফিকুল বাসার ও সারওয়ার সুমন কুতুবদিয়া থেকে ফিরে ।।
বাড়ছে বাতাস, ঘুরছে পাখা, জ্বলছে আলো। বিষয়টি এমনই। সমুদ্রের পাড়ে প্রাকৃতিক বাতাসে পাখা ঘুরছে। আর সেই পাখা ঘোরা থেকে তৈরী হচ্ছে বিদ্যুৎ। পরিষ্কার বা দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ। উন্নত অনেক দেশের মতো বাংলাদেশ যুক্ত হলো এই বায়ু বিদ্যুতের যুগে। সমতলভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন সমুদ্র উপকূল কুতুবদিয়াতে স্থাপন করা হয়েছে এই বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
শুক্রবার বাংলাদেশের প্রথম এই বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা সরেজমিন ঘুরে এর নানা তথ্য জানা গেছে। দীর্ঘদিন পরীক্ষা আর নানা আলোচনা-সমালোচনার পর ৩০শে মার্চ বাতাস থেকে উৎপাদন হওয়া বিদ্যুৎ মানুষের ঘরে গিয়ে আলো জ্বালানো শুরু করেছে। ছোট পরিসর। মাত্র এক মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এই কেন্দ্র। ৫০ ফুট উচ্চতার ৫০টি বিশেষ খুঁটি বা টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটির মাথায় তিনটি করে পাখা। পাখাগুলো ১৪ ফুট লম্বা। সাথে জেনারেটর। পাখা ও জেনারেটর মিলে ১ দশমিক ২ টন ওজন।
সমুদ্র থেকে বাতাস আসছে। আর সেই বাতাসে পাখা ঘুরছে। এই পাখা ঘোরা থেকেই বিদ্যুৎ হচ্ছে। তবে সরাসরি এই বিদ্যুৎ গ্রাহককে দেয়া হচ্ছে না। প্রথমে ব্যাটারিতে জমা করা হচ্ছে। পরে সন্ধ্যায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
বাতাসে যে পাখা ঘুরছে তা স্বয়ংক্রিয়। ব্যাটারির চার্জ পুরোপুরি হয়ে গেলে পাখা ঘোরা বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাটারির বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে গেলে আবার ঘুরতে থাকে পাখা। তবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি দেয়া গেলে সমস্যা কিছুটা কম হতো। পাখা থেকে যে বিদ্যুৎ হচ্ছে তা প্রথমে রাখা হচ্ছে এক কিলোওয়াট ক্ষমতার একহাজার ব্যাটারিতে। পাখা থেকে আসছে বিকল্প বিদ্যুৎ (অল্ট্রানেটিভ কারেন্ট, এসি)। আটটি ইনভেটর আছে। সেখানে এসি থেকে ডাইরেক্ট কারেন্ট (ডিসি) হচ্ছে। এক হাজার ব্যাটারি থেকে এই ইনভেটরে বিভিন্ন ভোল্টের বিদ্যুৎ আসছে। সেখান থেকে আরো আটটি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (কন্ট্রোল প্যানেল) বিভিন্ন ভোল্টকে এক ভোল্টে পরিণত করছে। এখান থেকে দুইটি ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে ১১হাজার ভোল্ট করে গ্রীডে চলে যাচ্ছে। সেখান থেকে গ্রাহকরা তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
কুতুবদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তার নিজস্ব লাইন দিয়ে সরবরাহ করছে বিদ্যুৎ। কুতুবদিয়ায় ডিজেল চালিত ১৬০ কিলোওয়াট ও ২৫০ কিলোওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট আছে। কিন্তু ২৫০ কিলোওয়াট-এর ইউনিটটি গত দুমাস ধরে নষ্ট। ১৬০ কিলোওয়াটের মধ্যে উৎপাদন হয় ১০০ কিলোওয়াট। একই লাইনে বায়ু বিদ্যুৎ ও ডিজেল বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। যখন বায়ু বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় তখন ডিজেল চালিত যন্ত্র বন্ধ রাখা হয়। আবার ডিজেল বন্ধ রেখে বায়ু বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
গ্রাহকরা অবশ্য প্রথমে যে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিল সে আকাঙক্ষা মেটাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। কারণ এক হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ বায়ু কেন্দ্র থেকে সরবরাহ করা যায়নি। এখনো ৪০০ থেকে ৬০০ কিলোওয়াট সরবরাহ করা হয়েছে। বায়ু ও ডিজেল মিলিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৩ থেকে ৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে কুতুবদিয়ায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর পর দুটি ঝড়ে বেশ কিছু পাখা ভেঙ্গে যাওয়া ও কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে পুরোপুরি উৎপাদন হয়নি। তবে খুব তাড়াতাড়ি এটা আবার পুরোপুরি উৎপাদনে যাবে।
সম্পূর্ণ পিডিবির নিজস্ব অর্থায়নে এই কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এর জন্য খরচ করা হয়েছে ৯ কোটি টাকা। ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে এটি স্থাপন কাজ শুরু করা হয়। ৯ মাসে শেষ হয়। চীন থেকে এই প্রযুক্তি আমদানি করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবেও তৈরী করা হয় কিছু অংশ। কেন্দ্র স্থাপন করতে যে খরচ হয়েছে তারপর আর কোন জ্বালানি খরচ নেই। শুধু পরিচালনার জন্য ৪ জন টেকনিশিয়ান প্রয়োজন হবে। যাদের দিতে হবে মাসিক বেতন।
প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল রহমান বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পর উপদেষ্টা। আগামী মার্চ মাসে তিনি এই প্রকল্প পিডিবির কাছে হস্তান্তর করবেন। ফজলুল রহমান ইত্তেফাককে বলেন, অনেকে বলেন বাংলাদেশে বাতাস নেই। এখন প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশে প্রচুর বাতাস আছে। সাত বছর নিয়মিত চললে এর টাকা উঠে আসবে। কুতুবদিয়ার এই কেন্দ্রকে ঘিরে আরো ২০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন। বলেন, আমাদের প্রায় ৭০০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকায় সাশ্রয়ী এমন প্রকল্পে তৈরি করা সম্ভব আরো অন্তত ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কক্সবাজার পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী সামসুল আলম বলেন, এটি খুব সম্ভাবনাময়ী প্রকল্প। আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা হলে অন্য এলাকাতেও করা সম্ভব। বড়ঘোফ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও বিআরডিবি চেয়ারম্যান জাফর আলম বলেন, বায়ু বিদ্যুতের আলোয় বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই করা যায় প্রয়োজনীয় সব কাজ। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পাখাগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। সমাধান করতে হবে কারিগরি ছোট-খাটো ত্রুটিগুলোও। আলী আকবর ডি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এটিএস নূরুল বসর চৌধুরী দিনে তিন চার ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে বলে জানান। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুতুবদিয়া অঞ্চলের আবাসিক প্রকৌশলী আজগর আলীও মনে করেন ঠিকঠাকভাবে পরিচালিত হলে বায়ু বিদ্যুৎ দিয়ে অনেক কিছুই করা সম্ভব। তিনি বলেন, ‘কুতুবদিয়ার প্রকল্পটি প্রথম হওয়ায় নতুন অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। পুরনো হতে হতে এসব সমস্যা ক্রমশ কমে আসবে বলেই আমার বিশ্বাস।বর্তমান প্রকল্পের সীমাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাগর পাড়ে পর্যাপ্ত বাতাস থাকলেও ব্যাটারীতে চার্জ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখা যাচ্ছে না। এজন্য কোটি টাকা দামের বুস্টারের প্রয়োজন থাকলেও প্রকল্প কর্মকর্তা তা এখনো লাগাননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়েজ আহমদ বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পকে আদর্শ আখ্যা দিয়ে বলেন, যথাযথভাবে তত্ত্বাবধান করা দরকার। আমরা এ থেকে উপকার পাওয়া শুরু করেছি। ভবিষ্যতে আরো পাব বলে আশা করছি। শনিবার সন্ধ্যায় বায়ু বিদ্যুৎ থেকে তিন/চার ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
Source: http://digitalphulbari.blogspot.com


বিদ্যুৎ মানব

বিদ্যুৎ মানবরাস্তায় গাড়ির চাপ থেকে বিদ্যুৎ, হস্তচালিত বৈদ্যুতিক বাতি, আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ, খেলনা গাড়ি, সেমি-অটোরিকশা_সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টি আবিষ্কার আছে তাঁর ঝুলিতে। গবেষকের নাম এইচ এম ওয়াহিদুজ্জামান বাচ্চু। সম্ভাবনাময় এই গবেষকের উদ্ভাবনগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন সমুদ্র সৈকত বলিউডের 'তারে জামিন পার' ছবির ছোট্ট দারশিলের কথা মনে আছে? তার মতোই ডানপিটে ছিলেন বাচ্চু। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময়ই পাঁচ চাকার ইলেকট্রিক খেলনা গাড়ি বানিয়ে বন্ধুদের তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। শিক্ষকদের বাহবাও পেয়েছিলেন বেশ। স্কুল পালিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরেফিরে খুঁজে বেড়াতে লাগলেন ফেলে দেওয়া ব্যাটারি, টিনের কৌটা, ভাঙা চুম্বক, পেরেক ও বিদ্যুতের তার। বাসায় এনে নাড়াচাড়া করতে করতেই তৈরি করেছেন কত কী। স্কুলের গণ্ডি আর টানল না তাঁকে। এসএসসি পর্যন্ত পড়েই ঢুকে পড়লেন নিজের জগতে। এরপর কেটে গেল কয়েক দশক।
প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞানের ওপর পড়াশোনা না থাকলেও বই পড়েই শিখেছেন বিজ্ঞানের সাধারণ বিষয়গুলো। তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন 'ওয়াহিদ ল্যাব'। যে গবেষণাগার দেখতে এখনো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসেন বাঘা বাঘা শিক্ষকরাও।

রাস্তায় বিদ্যুৎ
রাস্তায় গাড়ি চলবে, আর সেই গাড়ির চাপে তৈরি হবে বিদ্যুৎ। প্রযুক্তির নাম_'ওয়াহিদ পাওয়ার এনজি-৪'। এটি পুরোপুরি চাপের ওপর নির্ভরশীল। উদ্ভাবক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, এক হাজার কিলোওয়াট বা এক মেগাওয়াটের প্রতিটি পাওয়ার প্ল্যান্টের দৈর্ঘ্য হবে ৫০ মিটার এবং প্রস্থ ৩ মিটার। প্ল্যানটি তৈরি করতে হবে ইস্পাত দিয়ে। দেখতে অনেকটা বেইলি ব্রিজের মতো হবে। ব্যস্ত হাইওয়ের পাশে এই পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা যাবে। প্ল্যান্টের ওপর দিয়েই চলবে গাড়ি। এমন একটি এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টে হারমোনিয়ামের মতো ৫০টি পাওয়ার বাটন থাকবে। এর ওপর দিয়ে গাড়ি চললে প্রতিটি বাটনে চাপ পড়বে এবং এতে করেই বিদ্যুৎ তৈরি হবে।
পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি গ্রিডে যুক্ত হবে না। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ব্যাটারিতে চার্জ করা বিদ্যুৎ দুই-তিন দফায় সাত থেকে আট ঘণ্টা পর পর গ্রিডে যুক্ত করতে হবে। আর এই প্ল্যান্ট স্থাপনে বিদেশি কারিগরি সহযোগিতাও লাগবে না।
২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে খণ্ড খণ্ড অথবা একত্রে এক কিলোমিটার লম্বা পাওয়ার প্ল্যান্ট বসাতে হবে। এই হিসাবে মাত্র ২৫ কিলোমিটার পাওয়ার প্ল্যান্টের মাধ্যমে ওয়ানওয়ে ৫০০ মেগাওয়াট এবং টুওয়ে রাস্তায় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
ওয়াহিদুজ্জামান জানান, প্রতি এক মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনে খরচ পড়বে প্রায় ৯ কোটি টাকা। চার-পাঁচ মেগাওয়াটে এ খরচ আনুপাতিক হারে কমে আসবে। এ প্রযুক্তির সুবিধা হলো, একবার স্থাপনের পর রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ কোনো খরচ নেই।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সিলিং ফ্যান
সৌরবিদ্যুতে চালানোর উপযোগী নতুন প্রযুক্তির সিলিং ফ্যান উদ্ভাবন করেছেন গবেষক ওয়াহিদুজ্জামান। এর মধ্যে ২৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের চার ব্লেডের দুটি ও ৩৬ ইঞ্চি ব্লেডের একটি মডেল তৈরি করেছেন। একটি ফ্যান চলবে মাত্র একটি এএ সাইজের ১ দশমিক ৫ ভোল্ট ব্যাটারিতে। তবে ১২ ভোল্ট প্রয়োগে আরো জোরে ঘুরবে পাখা। বিদ্যুৎ খরচ হবে ১৫ থেকে ২০ ওয়াট।

আবর্জনা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ
ধানের খড়, চিটা, তুষ, গমগাছ, মুগ-মসুর-খেসারি গাছের ডাল, আলুগাছ, কাঠের গুঁড়ো, আখের ছোবড়া, ডাব-নারিকেলের ছোবড়া এমনকি গোবরের চট-মুটিয়া প্রভৃতি বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন এই গবেষক। নাম দিয়েছেন 'ওয়াহিদ পাওয়ার এনজি-৩'। গিয়ার, টারবাইন, বয়লার, জেনারেটর যুক্ত করে খুব সহজেই পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি সম্ভাব। ওয়াহিদুজ্জামান জানান, 'আমার মডেলটি বড় আকারে তৈরি করতে ২ দশমিক ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য খরচ পড়বে প্রায় ১৪ কোটি টাকা।

সেমি অটোরিকশা
আমাদের দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের চেয়ে চাহিদা অনেক গুণে বেশি। তাই প্রতিদিন পোহাতে হয় লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ। জানা যায় যে উৎপাদিত বিদ্যুতের ১৬ ভাগের এক ভাগ চলে যায় ব্যাটারিচালিত যানবাহন চার্জ করতে। শহর থেকে গ্রামে এখন অটোরিকশার ছড়াছড়ি। বৈধ ও অবৈধভাবে এসব যানবাহন চার্জ দিতে প্রতিদিন অপচয় হচ্ছে প্রচুর বিদ্যুৎ। প্রতিদিনের এই বিদ্যুৎ অপচয় বন্ধ করতে তাই উদ্ভাবক ওয়াহিদুজ্জামান গত ২৬ অক্টোবর তৈরি করেছেন সেমি অটোরিকশার মডেল। সাধারণ রিকশার চেন-গিয়ার-প্যাডেল ঘোরানোর মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতে চলবে এই যান। এতে শক্তিও লাগবে কম। রিকশা চালাতে যানজটে আটকা পড়লে কিংবা অবসরে প্যাডেল ঘুরিয়ে ১২ ভোল্টের রিচার্জবেল ব্যাটারি চার্জ দেওয়া যাবে। পরে সুইচ টিপে চালানো যাবে রিকশা। এতে গতিও বাড়বে আনেকখানি। দামও থাকবে রিকশাওয়ালাদের সাধ্যের মধ্যে।

আরো আরো যন্ত্র
ওয়াহিদুজ্জামানের অন্যান্য উদ্ভাবনগুলো হলো_হাতে গিয়ার ঘুরিয়ে তৈরি বিদ্যুতে চলবে এমন টর্চ লাইট, টেবিল ল্যাম্প, 'অটো পাম্প কন্ট্রোলার-২', রিকশা ও ভ্যানের জন্য 'অটো হারিকেন', রিমোট কন্ট্রোলারচালিত রিচার্জেবল 'বেবি কার', এক ব্যাটারিচালিত 'বেবি ইউরিন এলার্ম' এবং 'ব্যাটারিচালিত বেশ কিছু খেলনা গাড়ি'। এছাড়া পানির কলে লাগিয়েছেন এমন সেন্সর, যাতে করে কলের নিচে হাত রাখলেই পড়বে পানি।

স্বপ্ন
এ উদ্ভাবক এখন কাজ করছেন 'ওয়াহিদ পাওয়ার টেকনোলজি (ওয়াহিদ ইঞ্জিন)' নিয়ে। এতে বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ তৈরি হবে। এতে সামান্য চাপ প্রয়োগেই আশাতীত পরিমাণ বিদ্যুৎ তৈরি হবে বলে দাবি করছেন ওয়াহিদুজ্জামান।
ওয়াহিদুজ্জামান আরো জানান, পুঁথিগত বিদ্যার বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাধারণ সূত্রের মধ্যে কাজ করছেন না তিনি। তবে তাত্তি্বকভাবে যে সফলতা এতে পেয়েছেন তাতেও যথেষ্ট আশাবাদী।
এ কাজে পৃষ্ঠপোষকতার জন্য ওয়াহিদুজ্জামানের সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানের আলাপ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সহায়তা পেলে যে তিনি আরো এগিয়ে যাবেন, তা তার 'ওয়াহিদ ল্যাব' ঘুরে এলেই বোঝা যাবে।

বান্দরবানে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টের গ্যাস সিএনজি-সিলিন্ডারে বিক্রি হচ্ছে

বান্দরবানে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টের গ্যাস সিএনজি-সিলিন্ডারে বিক্রি হচ্ছে

০০মিলন চক্রবতর্ী, বান্দরবান

বান্দরবানে বায়োগ্যাস পস্ন্ল্ল্যান্টে উৎপাদিত গ্যাস সিএনজি ও সিলিন্ডারে বিক্রি হচ্ছে। বায়ো গ্যাস পস্ন্যান্টের উৎপাদিত বিদু্যতের আলোয় আলোকিত হচ্ছে প্রকল্পসহ আশপাশের ঘরবাড়ি। জেলা সদরের সূয়ালক এলাকায় ২ একর পাহাড়ী জমির উপর বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্ট করেছে খোকন দাস। বেকার এই যুবকের উদ্ভাবিত বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্ট দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। দুই একর পাহাড়ী জমির উপর প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করে গড়ে তোলা বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্ট পার্বত্য চট্টগ্রামে মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন প্রতিদিন বান্দরবানে উদ্ভাবিত বায়োগ্যাস প্রকল্পের কৌশল শিখতে ভীড় জমাচ্ছে সূয়ালকে। বায়োগ্যাস প্রকল্পটি থেকে বর্তমানে ৫ হাজার ওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন ছাড়াও সিএনজি ও গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রতিদিন উক্ত পস্ন্ল্যান্ট থেকে সাতকানিয়া ও কেরানীহাট সড়কে চলাচলকারী সিএনজিগুলো গ্যাস ভরাট করে নিচ্ছে বলে জানান সংশিস্নষ্টরা। পাশাপাশি উৎপাদিত গ্যাস এখন গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তি করে বান্দরবানসহ পার্শ্ববতর্ী বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রকল্প থেকে প্রচুর পরিমাণ জৈব সারও উৎপাদন করা হচ্ছে। আর্থিক সংকটে ক্ষুদ্র বায়োগ্যাস প্রকল্পটি বৃহৎ পরিসরে করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান উদ্ভাবক খোকন দাস। তিনি আরো জানান, বর্তমানে বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্টে মাত্র ৯টি গরু এবং কিছু হাঁস-মুরগি রয়েছে। কিন্তু বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্টের জন্য প্রচুর পরিমাণ কাঁচা গরুর গোবর ও হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠা প্রয়োজন। এ কারণে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরুর গোবর এবং হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা সংগ্রহ করে বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্ট চালানো হচ্ছে। বর্তমানে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টে গ্যাসের চাপ প্রচুর। সার্বক্ষণিক গ্যাসের চাপ ধরে রাখতে প্রচুর পরিমাণে গরুর গোবর দরকার হলেও জেলায় প্রয়োজনীয় গরুর গোবর পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান আবিষ্কারক খোকন দাস। অপরদিকে বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্টে উৎপাদিত ৫ হাজার ওয়াট বিদু্যৎ জেনারেটরের সাহায্যে সূয়ালক বাজার ও পাশর্্ববতর্ী বসতবাড়িতে সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা এবং টেকনিক্যাল সাপোর্ট (যন্ত্রাংশ) পাওয়া গেলে উদ্ভাবিত বায়োগ্যাস পস্ন্ল্যান্টের মাধ্যমে বান্দরবানে গ্যাসের সংকট দূর করা সম্ভব বলে মনে করছে স্থানীয়রা। বর্তমান সময়ে বিদু্যৎ সংকট দূর করতে বেসরকারীভাবে এই ধরনের উদ্যোগ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবে। রবিবার ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারাও প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছে।
Source: Daily Ittefaq

বায়োগ্যাস থেকে সিএনজি:
বান্দরবানের খোকন দৃষ্টি কেড়েছেন সারাদেশের কৃষি উদ্যোক্তার
- মাটি ও মানুষের কৃষি ডেস্ক

দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত বহুবার বায়োগ্যাস পস্ন্যান্ট স্থাপন ও কৃষকের লাভবান হওয়ার কথা আমরা পত্র-পত্রিকা কিংবা টিভির মাধ্যমে জানতে পেরেছি। অনেক ঝক্কি ঝামেলা পার হয়ে শেষ পর্যন্ত তারা দেখতে পেরেছেন সফলতার মুখ। আপনারা দেখেছেন তিন বছর আগে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের শ্যামেরঘন গ্রামে আব্দুর রাজ্জাক সিএনজি চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে মাঠে মাঠে সেচ সুবিধা পেঁৗছে দিতে। রায়গঞ্জ উপজেলা ছাড়িয়ে সিএনজি চালিত সেচ পাম্প পেঁৗছে যায় তাড়াশ উপজেলায়। অগভীর থেকে গভীর নলকূপের মাধ্যমেও চলতে থাকে সেচ সুবিধা পেঁৗছে দেয়ার কাজ। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের পটিয়ায় শিকলবাহার দুগ্ধপলস্নীর ঘরে ঘরে গড়ে উঠেছে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্ট। গ্যাসের বিদু্যতে আলোকিত হচ্ছে এক একটি ঘর, মিটছে তাদের নিত্য দিনের জ্বালানি চাহিদা।
বায়োগ্যাস পস্ন্যান্ট থেকে জ্বালানি হয়, বড় জোর জ্বলে বাতি, খামার পর্যায়ে এ প্রযুক্তির বিকাশ ছিল একুটুই। বান্দরবানের খোকন দাসই প্রথম বায়োগ্যাসের আরো কার্যকর ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছেন। ইতিমধ্যে টেলিভিশন ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার কল্যাণে তার এ সফলতা পেঁৗছে গেছে অনেক অনেক দূর। সারাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষি উদ্যোক্তার দৃষ্টি এখন এমন লাভজনক উদ্যোগের দিকে। কারণ, আমাদের দেশে দিন দিন বাড়ছে জৈব সারের চাহিদা; সে সঙ্গে জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রয়োজনীয়তার কথা তো বলাই বাহুল্য। আছে বিদু্যতের চাহিদা মেটানোর প্রয়োজনে বায়োগ্যাস থেকে দেয়া বিদু্যতেরও।
খোকন দাস দরিদ্র পরিবারের সন্তান। লেখাপড়ায় প্রাথমিক শ্রেণীর গণ্ডি পেরোতে পারেননি। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তার ভাবনায় গুরুত্ব পায় কৃষি। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা থেকে শুরু করে কীটনাশকের আগ্রাসন থেকে কৃষিকে বাঁচানোর জন্য চিন্তা-ভাবনা করে আসছেন অনেক আগে থেকেই। তার চিন্তায় ছিল উৎকৃষ্টমানের জৈব সার তৈরির বিষয়টি। এ চিন্তার পথ ধরেই একদিন পেঁৗছে যান বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টের কাছে।
খোকন দাস করতে চেয়েছেন ব্যতিক্রম কিছু। তাই বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টেই তিনি থেমে থাকেননি। পস্ন্যান্ট নিয়ে নতুন নতুন চিন্তা করেছেন রাত-দিন। দিনের পর দিন এঁকেছেন নতুন নতুন মানচিত্র। একদিন সূয়ালক এলাকায় ২একর পাহাড়ি জমির উপর গড়ে তোলা বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টটির দিকে দৃষ্টি আনতে পেরেছেন সারা দেশবাসীর। খোকন তার বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টের সঙ্গেই যুক্ত করেছেন গ্যাস জেনারেটর। সেখান থেকে উৎপাদিত বিদু্যতের শক্তি দিয়ে বায়োগ্যাসকে তৈরি করেছেন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসে। যাকে আমরা সিএনজি বলি।
দেশের লক্ষ লক্ষ যানবাহনের সবচেয়ে লাভজনক জ্বালানি সিএনজি। এখন প্রতিদিনই সিএনজি চালিত অটোরিক্সা আসে খোকনের এই পাম্প থেকে গ্যাস নিতে। এখানে ভাল মানের সিএনজি পাওয়াতে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন সিএনজি পরিবহনের চালকরা। খুব বেশি সিএনজির চাহিদা পূরণ সম্ভব হয় না ঠিকই কিন্তু এলাকাবাসী এখন বিশ্বাস করেছে যে এখান থেকে একদিন ঠিকই তাদের নানা ধরনের চাহিদা পূরণ হবে। কিন্তু মানুষের আশা বাড়িয়ে দেয়া এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন অনেক অনেক অর্থের।
বর্তমানে এই পস্ন্যান্টে মাত্র ৯টি গরু এবং কিছু হাঁস-মুরগি রয়েছে। কিন্তু পস্ন্যান্টের জন্য প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ কাঁচা গোবর ও হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা। এ কারণে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরুর গোবর এবং হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা সংগ্রহ করে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্ট চালানো হচ্ছে। বর্তমানে বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টে গ্যাসের চাপ প্রচুর। সার্বক্ষণিক গ্যাসের চাপ ধরে রাখতে প্রচুর পরিমাণে গরুর গোবর দরকার হলেও জেলায় প্রয়োজনীয় গরুর গোবর পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানালেন খোকন দাস। এখনো এই প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে খোকন চিন্তা করেন বায়োগ্যাস পস্ন্যান্টের উচ্ছিষ্ট অংশের জৈব সারকে। পস্ন্যান্টের মধ্যেই তিনি তার পরিকল্পনা ও নকশা অনুযায়ী স্থাপন করেছেন জৈব সারের একটি কক্ষ। যেখানে জমা হয় উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার। এরও বাণিজ্যিক গুরুত্ব কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের জন্য কম নয়। খোকন দাসের এই প্রকল্পের সঙ্গে সবচেয়ে সহায়ক হিসেবে রয়েছেন এই এলাকারই যুবক নূরুল আমীন।
বান্দরবানের সূয়ালকে খোকন দাসের উদ্ভাবন ও প্রয়াস সাড়া জাগিয়েছে গোটা এলাকাসহ সারাদেশে। একটি উদ্ভাবন থেকে ছোটখাটো একটি ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে গেছে খোকন দাসের নিরলস পরিশ্রমে। সিএনজি পরিবহনের পাশাপাশি বাড়িতে রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য সিলিন্ডারেও গ্যাস নিতে আসেন অনেকেই। গ্যাসের মান নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। এখন স্বল্প উৎপাদনেই দৈনিক কমপক্ষে তিন সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করেন খোকন দাস। যারা গ্যাস নিচ্ছেন তারাও আছেন বেশ স্বস্তিতে।
কৃষিকে লাভজনক করতে কিংবা জীবনের প্রাত্যহিক প্রয়োজনগুলো আরো সহজে মেটানোর জন্য তৃণমূলে চলছে বহু রকম গবেষণা। বিদু্যত, জ্বালানি আর জৈব সারের চিন্তা থেকেই বায়োগ্যাস, সেখান থেকেই সিএনজি। খোকন দাসের এই প্রকল্পটি এখন পর্যন্ত এদেশে বহুমুখি উৎপাদন ব্যবস্থার একটি মডেল। দেশের অনেক উদ্যোগী কৃষক ও খামারিই ইতিমধ্যে স্থাপন করেছেন বিভিন্ন আকারের বায়োগ্যাস পস্ন্যান্ট। সেখান থেকে তারা মেটাচ্ছেন দৈনন্দিন বিদু্যত ও জ্বালানির চাহিদা। এবার সিএনজির চাহিদা পূরণের চিন্তা নিয়ে এমন এক একটি পস্ন্যান্ট স্থাপিত হতে পারে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সেক্ষেত্রে খোকন দাসের এই পস্ন্যান্টটিই হতে পারে অনুসরণীয়। তা একদিকে আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রতিদিনের চাহিদা পূরণে যেমন কিছু অংশের যোগানদার হতে পারে, অন্যদিকে জৈব সার উৎপাদনেও আমরা এগিয়ে যেতে পারি বেশ খানিকটা পথ

Source: Daily Ittefaq, 30th January-2011

Sunday, June 17, 2012

বিদ্যুৎ সমস্যা- টোটকা ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান

 বিদ্যুৎ সমস্যা- টোটকা ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান

বর্তমানে বাংলাদেশে চলছে চরম বিদ্যুত সংকট।একদিকে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে মানুষের প্রাণ যায় যায়।বর্তমানে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা ৫ হাজার ৩শ মেগাওয়াট। অন্যদিকে উৎপাদন ৩ হাজার ৭শ থেকে ৩ হাজার ৮শ মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদা-জোগানের ফারাক ১ হাজার ৫শ মেগাওয়াট।এটি সরকারী হিসাব মতে। বেসরকারি হিসাবে অবশ্য বিদ্যুতের চাহিদা ৬ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। সে ক্ষেত্রে ঘাটতি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ মেগাওয়াট।আমার এক বন্ধু বলেছিল বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে আমাদের উচিত ছিল শীতপ্রধান দেশ হওয়া।কারণ

শীতকালে কারেন্ট যায়না


শীতকালে লোডশেডিং না হওয়ার মূল কারণ চাহিদা কম থাকা-বেশিরভাগ বাসা বাড়ি বা অফিসে ফ্যান বন্ধ থাকা ইত্যাদি।কিন্তু তখনও যে লোডশেডিং হয়না তা নয়।সেই ঝড়ের বেশিরভাগ যায় গ্রামবাংলার উপর দিয়ে।আমি এর প্রতক্ষ সাক্ষী।দিনে কমপক্ষে ৮-৯ ঘন্টা কারেন্ট থাকেনা শীতকালেই।গ্রীষ্ম কালে যাও কারেন্ট তারা পায় তা সেচমৌসুমের সুবাদে।কারণ আমাদের নাগরিক সরকারের বা সুশীল সমাজের গ্রামবাংলার কথা মনে পড়ে বোরো বা আমনের সেচমৌসুমে।না হলে যে সুশিলদের পেটে ভাত পড়বেনা।আর পেটে ভাত না পড়লে টানা নানা টকশোতে অংশ নেয়ার শক্তি পাবে কোথায়??এই সেচমৌসুমে যৎসামান্য বিদ্যুতপ্রাপ্তি বাদে গ্রামেরমানুষদের জন্য বিদ্যুত


"সে তো থাকে সুশিল পল্লীতে ঐ শহরে, এই গ্রামে তাকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।"


বিদ্যুত এর এই সমস্যার আরেক করুণ শিকার এইচ.এস.সির পরীক্ষার্থীদের।এই গরমে তাদের যে কি পরিমান কষ্ট হয় তা বিগত জোট সরকারের আমলে আমি আর মহাজোট সরকারের আমলে আমার ছোটবোন টের পাচ্ছে হাড়ে হাড়ে।আমার বোনকে পালাক্রমে বাতাস করে যায় মা,বাবা আর আমি একটি হাতপাখা দিয়ে।বেশি জোড়ে বাতাস করা যায়না।কারণ মোমবাতি নিভে যায়।এভাবে বাংলাদেশের মধ্যম মধ্যবিত্ত পরিবারগুলা দিন কাটাচ্ছে।এই বিদ্যুত সমস্যা নিয়ে সামুতে একটি স্টিকি পোস্ট দেখেছিলাম।সমাধান গুলা আমার কাছে খুব একটা যৌক্তিক মনে হয়নি।তারপরও লিখেছেন তো।

প্রধানমন্ত্রী আসুন ব্লগে কথা বলি, আসুন কৃচ্ছতা সাধন করি
বিদ্যুতের যে অবস্থা তাতে এখন পাশাপাশি টোটকা সমাধান ও দীর্ঘস্থায়ি সমাধান জরুরি।না হলে আমাদের মৃতপ্রায় শিল্পকারখানা গুলি অচিরেই পুরা মৃত হয়ে যাবে।বেকার হয়ে যাবে হাজার মানুষ।দেশে একটি পুরা নৈ্রাজ্যের সৃষ্টি হবে।ফলে আমাদের সবাইকে বিদ্যুত সমস্যা নিয়ে ভাবতে হবে।
 
টোটকা সমাধানঃ(আপাতত সমাধান):

১.আপাতত আমদের সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলি কি ভিন্ন ভিন্ন বারে ফেলা যায়না?এতে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা একই সময়ে আকাশ ছুবেনা।শিল্পকারখানা গুলা একসাথে স্থবির হয়ে বসে থাকবেনা।কিছুটা হলেও লাঘব হবে সমস্যা।
২.সাধারনত আমরা যেসব এসি ব্যাবহার করি বাসাবাড়িতে সেগুলা ১-৫ টন হয়ে থাকে।যা চালাতে কারেন্ট প্রয়োজন হয় প্রায় ৩-২০ কিলোওয়াট।অথচ একটি বৈদ্যুতিক ফ্যানের কারেন্ট রেটিং মাত্র ৮০-২০০ ওয়াট।আমরা কি দেশের এই আপতকালিন সময়ে পারিনা নিজেদের সামান্য সুবিধা ছাড়তে?আপাতত আমাদের উচিত এয়ার কন্ডিশনার গুলার ব্যাবহার কমানো।গ্রিষ্মে আপাতত ফ্যান ব্যাবহার করাই ভাল।ফলে উপকার পাবে জনসাধারণ।সাশ্রয় হবে বিদ্যুতের।শপিং মল গুলাতেও কমাতে হবে অহেতুক আলোকসজ্জা ও সেন্ট্রাল এসির ব্যাবহার।
৩।সাধারন বাতির ব্যাবহার কমিয়ে বাড়াতে হবে এনার্জি সেভিং বাতি বা ফ্লুরসেন্ট লাইট।বাথ্রুম বা টয়লেটে দেখি অনেকে ৬০ ওয়াটের বাতি ব্যাবহার করেন যা অর্থহীন।এখানে ৪-৫ ওয়াটের এনার্জি সেভিং বাতি যথেষ্ট।
৪।সামুর সেই পোস্টে দেখেছিলাম বলা হয়েছে

স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাসের বিশেষ গ্রীষ্মকালীন ছুটি ঘোষণা করুন। বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমবে। রবীন্দ্রনাথের তোতাকাহিনী গল্পটির কথা মনে আছে আপনার ? গরমে স্কুল কলেজ করতে গিয়ে কত ছেলেমেয়ে অসুস্থ হচ্ছে - একবার খবর নিয়ে দেখুন। এক মাস স্কুল বন্ধ রাখলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চাঙ্গে উঠবে এমনটা ভাবার মতো আবার্চীন আপনি নিশ্চয়ই নন। সজীব ওয়াজেদ জয় বিদেশে পড়াশুনা করেছে - প্রয়োজনে উনার সাথে পরামর্শ করলেও আপনি নিশ্চিত হবেন , বৈরী পরিবেশে একমাস স্কুল বন্ধ রাখলে বিদ্যাবুদ্ধির কোনও ঘাটতি হয়না।


এই লাইন্টার সাথে একদম একমত না।নানা কারণ্রে আমাদের শিক্ষাজীবন এমনিতেই বড় তার উপর আবার নতুন করে বন্ধ????কতটুকুই বা কারেন্ট নেয় একটা স্কুল?এটা সমাধান হতে পারেনা আপাতত সমাধান ও না এটা।

দীর্ঘমেয়াদি সমাধান
১।মাইক্রো পাওয়ারপ্লান্ট তৈরি করতে হবে।আমাদের দেশের দির্ঘ ট্রান্সমিশন লাইনের কারণে প্রচুর বিদ্যুতের অপচয় হয় তাই অন্চল্ভিত্তিক গ্রিড ব্যাবস্থা চালু করতে পারা যায় কিনা দেখতে হবে।

 
২।প্রতিটি ভারি ও মাঝারি শিল্প কারখানায় স্টার্লিং ইঞ্জিন ব্যাবহার করতে পারা যেতে পারে।স্টার্লিং ইঞ্জিন এক ধরনের বহির্দহ ইঞ্জিন বলে এতে যেকোন ফুয়েল ব্যাবহার করা যেতে পারে।ভারি ও মাঝারি শিল্প কারখানার WASTE HEAT বা নির্গত তাপকে ব্যাবহার করে স্টার্লিং ইঞ্জিনএর সাহায্যে প্রায় ৫০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুত উতপাদন করা সম্ভব।উপরন্তু এই ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা প্রায় ৫০% এর বেশি যা ঈর্ষনিয়।
 
৩.বিকল্প শক্তির ব্যাবহার ও এ সম্পর্কিত গবেষনাকে উৎসাহিত করতে হবে।বিশেষ করে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজেক্ট ও থিসিস হিসেবে সোলার ও ঊইন্ড এনার্জির সাহায্যে বিদ্যুত উতপাদন কে গুরুত্ব দিতে হবে।সোলার এনারজি নিয়ে বাংলাদেশে যেসব FYP হয়েছে সেগুলার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।যেমন 3 dimensional solar tracking device এর সাহায্যে বিদ্যুত উতপাদন নিয়ে কাজ করতে হবে।
 
৪.ঊইন্ড এনার্জি নিয়ে গবেষনা করতে হবে।যদিও বাংলাদেশে এর প্রয়োগ নিয়ে সন্দেহ আছে।তবুও সমুদ্রের তীর ও উপকুলে এ নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।কুতুবদিয়ায় একটি ঊইন্ড এনার্জি প্ল্যান্ট আছে।কিন্তু এর রক্ষনাবেক্ষন নিয়ে চলছে তামাশা।বাধ নষ্ট হয়ে যাওয়ায়
এটি ডুবে যেতে পারে।সাইক্লন এর বিরুদ্ধেও নেই পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা।প্রতি একক বিদ্যুত উৎপাদনে ডিসেল জেনারেটরে লাগে ৪০ টাকা কিন্তু উইন্ড এনার্জি প্ল্যান্টে লাগে মাত্র ৮ টাকা...!!!আশার কথা আমাদের পাশের দেশ ভারত ফি বছর ১২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করে। সুতরাং সম্ভাবনা আছে আমাদেরো।তাছাড়া কুতুব্দিয়ার প্ল্যান্টের ক্ষমতাও ১ মেগাওয়াট।তাই এর সঠিক রক্ষনাবেক্ষণ জরুরি।
 
৫.নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে।এ জন্য সঠিক Location বাছাই করতে হবে।কাপ্তাই জলবিদ্যুত প্রকল্পের মত Ecological balance নষ্ট করে এমন লোকেশন কাম্য নয়।
সবশেষে জনকল্যাণে কিছু বিষয়ে ঝুঁকি নিতে হবে। উদ্দেশ্য সৎ হলে এবং সৎসাহস থাকলে ঝুঁকি সত্ত্বেও অনেক সিদ্ধান্ত দ্রুততার সঙ্গে নেওয়া যায়। (সাপ্তাহিক ২০০০)


Source: http://www.somewhereinblog.net

মাটির নিচের তাপ দিয়েও বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

মাটির নিচের তাপ দিয়েও বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মাটির নিচের তাপমাত্রাকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের মাটির নিচের উচ্চ তাপমাত্রা দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সুমছুদ্দিন আহমেদ।
বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছে তেল-গ্যাস পুড়িয়ে তাপ উৎপাদনের চাইতে প্রকৃতিগতভাবেই মাটির নিচের তাপমাত্রাকে কাজে লাগিয়ে সহজে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।

ফিলিপাইতাদেমোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশ সমান ১৯ শ ৬৯ মেগাওয়াট, আইসল্যান্ড মোট ৩০ শতাংশ ৫৭৫ মেগাওয়াট আমেরিকা ৩ হাজার ৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জিও থার্মাল থেকে যোগান দিচ্ছে।
‘এছাড়া বিশ্বের অনেক দেশে জিও থার্মাল এনার্জি কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম একপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) সাবেক মহাব্যবস্থাপক সুমছুদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেছেন, তেল/গ্যাস/কয়লা পুড়িয়ে যে তাপ উৎপন্ন হয় সেই তাপ দিয়ে পানিকে বাষ্পীভূত করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
এর চাইতে আমাদের দেশের মাটির নিচে যে তাপমাত্রা রয়েছে তা দিয়ে সহজে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, কুপ খনন করে পানি পাম্প করে অন্যদিক দিয়ে বাষ্পীভূত করে টারবাইনের ভিতর দিয়ে নিয়ে গেলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরে রিসাইক্লিং পদ্ধতিতে তা আবারও কূপে নেওয়া যায়।
জয়পুরহাটের কুচমা এলাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, এখানে ৪ হাজার মিটার মাটির নিচে গড়ে ১৪৫ ডিগ্রি,সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে। যা দিয়ে পানি বাষ্পীভূত করে সহজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন জয়পুরহাট থেকে দেশের যতই উত্তরে দিকে যাওয়া যায় ততই মাটির নিচের এ তাপমাত্র বাড়ন্ত পাওয়া যায়।
অপর এক বিশেষজ্ঞ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতি ১০০মিটার মাটির গভীরতায় ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।যা রংপুর অঞ্চলে ৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রয়েছে।
সামছুদ্দিন আরও বলেন, জিও থার্মাল এনার্জিতে দেশের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কাজে লাগানো যায়। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দুষণমুক্ত থাকবে একই সঙ্গে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব সাধিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের এই পদ্ধতিকে জিও থার্মাল এনার্জি বলা হয়। এতে দেশের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় হলেও এখন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
এমনকি সুইডেনের রয়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (কেটিএইচ) ইন স্টকহোম এর দেওয়া একটি প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে পেট্রোবাংলার অসহযোগিতার কারণে।
২০০৯ সালের ২এপ্রিলে কেটিএইচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিভাগের সঙ্গে অরগানাইজেশন অব দ্যা বাংলাদেশ জিও থার্মাল নামের একটি প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করে।
ড. হার্বার্ট হ্যংকেরকে প্রধান করে একটি প্রকল্প কমিটি করা হয়। এতে প্রকল্প ব্যবস্থাপক করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাসানকে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের ভূগর্ভের তাপমাত্রা সমীক্ষা করাও বিদ্যুৎ উৎপাদনে উপযোগী কি-না যাচাই করে দেখা।
সামছুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, প্রকল্পের পরিচালক হার্বার্ট হ্যংকার একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। কিন্তু সরকারে সহায়তা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।
তিনি দাবি করেন তাদের, দেশে খনিজ অনুসন্ধান ও উন্নয়নের জন্য যে সব কূপ খনন করা হয়েছে। সেসব কূপের ভূগর্ভের তাপমাত্রার তথ্য চেয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় তথ্যসহায়তা দেওয়ার জন্য পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেয়। পেট্রোবাংলা নির্দেশ পাওয়ার পর বাপেক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে।
সে মোতাবেক বাপেক্সে যোগাযোগ করলে বাপেক্সের তৎকালীন এমডি (বর্তমানে পিএসসির পরিচালক) এমাজউদ্দিন আহমেদ আমাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন।
তারপর হার্বার্ট হ্যংকের বাংলাদেশ থেকে চলে যান।
সুইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এতে লাভ কি এ প্রশ্ন করা হলে সামছুদ্দিন বলেন, হয়ত সমীক্ষা করা গেলে তারা পরবর্তীতে জিও থার্মাল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তাব করত।
আমাদের দেশে যে সব কোম্পানি গ্যাস ও কয়লা ক্ষেত্রে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে তারা খনিজ আবিষ্কার করলে সেখান থেকে তাদের বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কি সে রকম কোন বিষয় জড়িত রয়েছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ধরণের কোনও বিষয় ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের দেশের একশ্রেণীর কর্মকর্তা আছেন যারা শুধু কোন প্রকল্প নিলে বেশি টাকা নিজের পকেটস্থ করা যাবে সেই ধান্ধায় থাকেন।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে জানানা, প্রফেসর হ্যংকের (সুইডেন), প্রফেসর বদরুল ইমাম এবং আমি নিজে জড়িত থেকে ঠাকুরগাঁও এ সমীক্ষা চালিয়েছিলাম। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট বলে মনে হয়নি।
সুইডেনের ওই বিশ্ববিদ্যালয় এনিয়ে আগ্রহ দেখিয়ে ছিল। আমাদের কাছে তারা তথ্য চেয়েছিল। আমরা বলেছি আপনারা নিজেরা কূপ খনন করে সমীক্ষা চালান।
তথ্য না দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, সব তথ্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া যায় না।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই- ইলাহী চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, জিও থার্মাল এনার্জি নিয়ে যে সব কথা হয় সবগুলো হাওয়ার উপর। বাংলাদেশ ভূতত্ত্ব অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁওয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। তবে ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়।
সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা বিষয়ে বলেন, ওরা আমাদের কাছে এসেছিল আমরা তাদের কাজ করতে বলেছি।
বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার অসহযোগিতার কারণে তারা কাজ করতে পারছে না মর্মে যে অভিযোগ সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়টি তো ভূতত্ত্ব অধিদপ্তরের। বাপেক্স, পেট্রোবাংলা আসবে কেন?
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১১