Friday, June 15, 2012

বায়োগ্যাসে ঝালাই!

বায়োগ্যাসে ঝালাই!
বায়োগ্যাসে ঝালাই করছেন শিবু সরকার শিবুর বায়ো-প্ল্যান্ট

দেশে এখনো রান্না ও গুটিকয়েক বাতি জ্বালানোর কাজেই ব্যবহৃত হচ্ছে বায়োগ্যাস। ব্যতিক্রম গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের শিবু সরকার। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট দিয়ে কাপড় ইস্ত্রি থেকে শুরু করে ছোটখাট ঝালাইয়ের কাজও চালাচ্ছেন তিনি। তাঁর প্ল্যান্ট ঘুরে এসে জানাচ্ছেন সন্দীপ কুমার সেন

শিবু বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেন গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে। মার্চের শেষ নাগাদ সব কাজ হয়ে যায়। ২ দশমিক ৪ ঘনমিটারের প্ল্যান্টটি নির্মাণে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৩৫ হাজার টাকা। নবায়নযোগ্য শক্তির আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কম্পানি লিমিটেড (ইডকল) থেকে ৯ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছিলেন শিবু। আর প্ল্যান্ট নির্মাণের পর্যবেক্ষক ছিল গ্রামীণ শক্তি।
শিবু সরকারের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জৈব সার তৈরি ও রান্না। কিন্তু গ্যাস প্লান্টটি চার্জ করার আগেই চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যমুনায় বিলীন হয়ে যায় শিবুর নিজের ও বর্গা নেওয়া জমি। সম্বল ছিল দুটি গরু। দুটিই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। তবে হাল ছাড়েননি শিবু। ভাবলেন গ্যাস প্লান্ট দিয়ে উপার্জনের কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি না। বেশ কষ্টে আবার দুটি গরু কেনেন। কিন্তু গোবর কম হওয়ায় চার্জ হচ্ছিল না প্ল্যান্ট। এমন অবস্থায় কার না মাথা ঠিক থাকে! শিবু তাই রাগ করে গ্যাস তৈরির মূল ট্যাংকে গোবরের পরিবর্তে ঘাস ও বিভিন্ন বর্জ্য ঢেলে দিলেন। কিছু দিন পর প্ল্যান্টটি হঠাৎ চার্জ হয়ে গেল। বের হতে লাগলো গ্যাস! এতে নতুন আইডিয়া পেয়ে যান শিবু। একসময় কাজ করতেন ঝালাইয়ের ওয়ার্কশপে। তাই ভাবলেন অঙ্-িএসিটিলিন গ্যাসের কাজটি মিথেন দিয়ে করা সম্ভব কি না? গ্যাসপাইপের সঙ্গে জুড়ে দিলেন একটি অঙ্েিজনের পাইপ। এখন শিবু সেই বায়োগ্যাস প্লান্ট দিয়ে দিব্যি ঝালাই চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য একটি গ্যাসপাইপ দিয়ে চুলা জ্বালিয়ে গরম করছেন ইস্ত্রি। আর এতে করে টুকটাক আয়ও হচ্ছে।
এখন শিবু সরকারের চিন্তা হলো প্লান্টে উৎপাদিত গ্যাস সিলিন্ডারে ঢোকানো। মিথেন গ্যাসকে বোতলজাত করার পাম্প মেশিনের সঙ্গে প্লান্ট থেকে আসা গ্যাসপাইপ যুক্ত করে গ্যাস বোতলে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন শিবু।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরির প্রচলিত নিয়ম উপেক্ষা করেছেন শিবু। আর প্রমাণ করেছেন একটা সামান্য উদ্যোগই পারে দেশকে চলমান জ্বালানি সংকট থেকে অনেকখানি বাঁচিয়ে দিতে।
Source: Daily Kalerkantho

No comments:

Post a Comment