Friday, June 15, 2012

হাতের কাছেই বিদ্যুতের বিকল্প

হাতের কাছেই বিদ্যুতের বিকল্প
নিজের প্রয়োজনটুকু মেটাতে বিদ্যুেকই ধরে রাখছে অনেক কিছুর মাধ্যমে। কিছু সময়ের জন্য হলেও আলোকিত থাকতে ব্যবহার করছে চার্জার লাইট, আবার গরমের দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চার্জার ফ্যান। চাহিদা অনুযায়ী কেউ ব্যবহার করছে আইপিএস, আবার অনেকে জেনারেটর। বাজার ঘুরে এসব নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন মাহাবুব মাসফিক

চার্জার লাইট
চার্জার লাইটই বিদ্যুত্ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোকিত করে দেবে আপনার ঘর। দিন বদলের ফলে মানুষ অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে প্রযুক্তির ওপর। প্রযুক্তির ছোঁয়াতে অনেক অসম্ভবও এখন সম্ভব হচ্ছে। তাই হঠাত্ আঁধারে চারপাশ ঢেকে গেলে পাশে থাকবে চার্জার লাইট। জরুরি কাজ করতে করতে কিংবা রাত পোহালে পরীক্ষা-এমন অবস্থায় চার্জার লাইটের গুরুত্ব কতটা তা হাড়ে হাড়ে বোঝা যায়। বাজার ঘুরে দেখা যায় যে, বাজারে বিভিন্ন মডেল ও ডিজাইনের চার্জার লাইট পাওয়া যাচ্ছে। কিছু লাইট আছে, যা সরাসরি বৈদ্যুতিক লাইনে সংযোগ দিতে হয়। বিদ্যুত্ থাকাকালে এ লাইটগুলোতে চার্জ হতে থাকবে এবং বিদ্যুত্ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠবে। এ লাইটগুলোর সুইচ দু’ধরনের। একটি ম্যানুয়াল অন্যটি রিমোট কন্ট্রোল। ম্যানুয়াল সুইচগুলোর দাম পড়বে ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। রিমোট কন্ট্রোলগুলোর দাম পড়বে ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অন্যান্য কাজেও টেবিলে ব্যবহার করা হয় কিছু চার্জার লাইট। এ লাইটগুলো কিনতে পারবেন ১৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে, যার সামনে ও পাশে লাইট জ্বালানোর ব্যবস্থা রয়েছে। অন্যদিকে কিছু টেবিলল্যাম্প আছে যার সুইচগুলো ম্যানুয়াল ও চার্চ সুইচ। এ ধরনের টেবিলল্যাম্পগুলো কিনতে পারবেন ৪০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। চার্জার লাইটগুলো সহজেই পেতে পারেন যে কোনো ইলেকট্রনিক মার্কেটে বা দোকানে। তবে জেনে রাখবেন নামি ব্র্যান্ডের না হলে সাধারণ চার্জার লাইটের কোনো গ্যারান্টি-ওয়ারেন্টি নেই।

চার্জার ফ্যান
বিদ্যুতের যাওয়া-আসায় ব্যাহত হয় আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। লোডশেডিংয়ের কারণে তো আর থেমে থাকবে না জীবনযাত্রা। জীবন চলবে আপন গতিতে। বিনা নোটিসে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন চার্জার ফ্যানের মাধ্যমে। কারণ বিদ্যুত্ না থাকলেও চার্জার ফ্যানের কল্যাণে আপনি কয়েক ঘণ্টা পেতে পারেন আরামদায়ক বাতাস। শুধু হিমেল হাওয়া নয়, আপনার আঁধার ঘরে স্নিগ্ধ আলোও ছড়িয়ে দিতে পারে চার্জার ফ্যানের সঙ্গে যুক্ত থাকা চার্জার লাইট। বাজার ঘুরে দেখা গেল নরমাল ফ্যানের চেয়ে চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বা সর্বাধিক চাহিদা রয়েছে কনকা, সনি, উইনস্টার, ডিফেন্ডার, ন্যাশনাল ফিটেট, প্যানাসনিক, জিএফসি প্রভৃতি।
চার্জার ফ্যান বিক্রি হয় মূলত ইঞ্চি হিসেবে বলে জানালেন এক বিক্রেতা। ন্যাশনাল ফিটেট ব্র্যান্ডের ৯ ইঞ্চি চার্জার ফ্যান পাবেন ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার ৩শ’ টাকায়, ন্যাশনাল ফিটেট ১০ ইঞ্চির দাম পড়বে ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার ৯শ’ টাকা। কনকা ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম পড়বে ২ হাজার ৮শ’ থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা। কনকা ১৪ ইঞ্চি চার্জার ফ্যান কিনতে পারবেন ৩ হাজার ৩শ’ থেকে ৩ হাজার ৮শ’ টাকার মধ্যে এবং ১৬ ইঞ্চির দাম পড়বে ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৪শ’ টাকা।
ডিফেন্ডার ৮ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম পড়বে ২ হাজার ৩শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা। যদি কিনতে চান ১০ ইঞ্চি ডিফেন্ডার চার্জার ফ্যান, তবে আপনাকে গুনতে হবে ২ হাজার ৯শ’ থেকে ৩ হাজার ১শ’ টাকা পর্যন্ত। ১২ ইঞ্চি কিনতে চাইলে ৩ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা গুনতে হবে।
বেস্ট পাওয়ার ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম পড়বে ২ হাজার ৮শ’ থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা। কিন্তু আপনার পছন্দ যদি সনি চার্জার ফ্যান, তবে আপনাকে আকারভেদে গুনতে হবে ১ হাজার ৪শ’ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা পর্যন্ত।
উইন্টার ১২ ইঞ্চি চার্জার ফ্যান কিনতে ২ হাজার ৮শ’ থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা লাগবে। অন্যদিকে টাওয়ার ৯ ইঞ্চি চার্জার ফ্যানের দাম পড়বে ২ হাজার ৫শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকা। ১০ ইঞ্চির দাম পড়বে ৩ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার ৬শ’ টাকা।

প্রাপ্তিস্থান ও সতর্কতা
চার্জার ফ্যান কিনতে আপনি যেতে পারেন রাজধানীর বৃহত্ ইলেক্ট্রনিক মার্কেট নবাবপুরে। এ ছাড়াও পাবেন গুলিস্তানে সুন্দরবন স্কয়ার, নিউমার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেট, মিরপুর-১, শাহআলী মার্কেট, মিরপুর-১০, খিলগাঁও তালতলা মার্কেট, মৌচাক মার্কেটসহ নগরীর বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মার্কেটে।
চার্জার ফ্যান কেনার সময় এবং পরে ব্যবহারের সময় কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
* ফ্যান কেনার আগে গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টি কার্ড বুঝে নিন।
* চার্জার ফ্যানের সুইচ, নেট, ইলেক্ট্রনিক তার, স্ট্যান্ড প্রভৃতি জিনিস ভালোভাবে দেখে নিন।
* বিদ্যুত্ চলে যাওয়ার পর যতক্ষণ চালাবেন ঠিক ততক্ষণ চার্জ করুন।
* বাচ্চাদের দ্বারা ফ্যান অন কিংবা অফ না করাই ভালো।
* সপ্তাহখানেক পর পর নেটগুলো খুলে ধুলাবালি মুছে ফেলুন।
* চার্জার ফ্যান কেনার সময় অবশ্যই দরদাম করে কিনবেন। মার্কেটভেদে প্রদত্ত দামের পার্থক্য হতে পারে। তাই কেনার আগে যাচাই-বাছাই করে ভালো মানের চার্জার ফ্যান কেনার চেষ্টা করুন।

No comments:

Post a Comment