Monday, May 21, 2012

কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা

কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা 
Saturday, 05 September 2009

স্টাফ রিপোর্টার: কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে প্রবাহিত বাতাসকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কুতুবদিয়ায় অবসি'ত ১ মে.ও. ক্ষমতা সম্পন্ন বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের সফলতার পর প্রকল্পের পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান কক্সবাজার শহর, সেন্টমার্টিন, মগনামা ও মহেশখালীসহ জেলার পুরো উপকূলীয় এলাকাকে বায়ু বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করার স্বপ্ন দেখছেন। তবে এজন্য দরকার পৃষ্ঠপোষকতা। বায়ু বিদ্যুতের বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা দেখতে সম্প্রতি কুতুবদিয়া পরিদর্শন করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
কুতুবদিয়া বায়ু বিদ্যুৎ বাস্তবায়নকারী দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্যান এশিয়া পাওয়ার সার্ভিস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, কক্সবাজারে বছরের অধিকাংশ সময়ই বাতাসের গতিবেগ বেশি থাকে। এই বাতাসকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজার শহর তথা উপকূলীয় এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব। এতে উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন-মান ও অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতের বাতাসের গতি প্রবাহ একই রকম। কিন' ভারত তাদের বাতাসকে কাজে লাগিয়ে ১২০০ মে.ও. বায়ু বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছে। বাংলাদেশও একই সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাতাসকে কাজে লাগানো হচ্ছে না। তার মতে, বাংলাদেশ উপকূলের সরল রৈখিক দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৪০ কি.মি। আর আকাঁবাকাঁ প্রায় ১২০০ কি.মি.। এসব এলাকার ১০ কি.মি. ভেতরে পর্যন্ত বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকে। তাই বিশাল এই উপকূলীয় এলাকার বাতাসকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা যায়। ফজলুর রহমানের মতে, কুতুবদিয়ায় ১ মে.ও. বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে যথাযথভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এবং এর সুফলও কুতুবদিয়া বড়ঘোপ এলাকাবাসী ভোগ করছে।
পুরো জেলার উপকূলীয় এলাকার বাতাসকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান চাহিদার চেয়েও বেশি বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কক্সবাজারের বর্তমান বিদ্যুৎ চাহিদা ৪০-৪৯ মে.ও.। আর বরাদ্দ পায় মাত্র ১২-১৮ মে.ও.। বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হলে বর্তমান চাহিদা পুরণ করে নতুন নতুন এলাকায় বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব হবে।
কক্সবাজার যেহেতু প্রাকৃতিক দূর্যোগপ্রবণ এলাকা। তাই বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প টিকিয়ে রাখা কষ্ঠসাধ্য। তবে কুতুবদিয়া বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিচালকের মতে, ২০০৮ সালের ৩০ মার্চ কুতুবদিয়া বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর পর নার্গিস, সিডর, বিজলী ও আইলার আঘাত সহ্য করে সামান্য ক্ষতি হলেও এখনও টিকে আছে। তবে বেঁড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস' হওয়ায় পুরো প্রকল্প এলাকা হুমকির সম্মুখীন। তাই বেঁড়িবাধ সংস্কার করা জরুরী হয়ে পড়েছে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগেও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব। কক্সবাজার তথা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার বাতাসের গতিকে কাজে লাগিয়ে যে সম্ভাবনার হাতছানি তা কাজে লাগানোর সময় এখনই।
প্রকৌশলী ফজলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ২৫ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গতিবেগ ১০০ থেকে ২৫০ কি.ও. বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম মাঝারী ধরণের বায়ুকল চালানোর জন্য যথেষ্ট। ৫০ মিটার উচ্চতায় ২৫ কি.ও. থেকে এক মে.ও. ক্ষমতা সম্পন্ন বড় ধরণের কল স্থাপন সম্ভব।
বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের কুতুবদিয়ার পাইলট প্রকল্প পরিদর্শন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভাপতি কর্ণেল (অব:) অলী আহমদ বীর বিক্রম প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী উন্নত দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলেন। সফরকালে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নবাব আলী আব্বাস খান এমপি, নজরুল ইসলাম এমপি, আজিজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি।
Source: http://www.thecoxnews.com

No comments:

Post a Comment