Thursday, May 10, 2012

সৌর বিদ্যুৎ বদলে দিয়েছে মতলবের চরাঞ্চলের মানুষের জীবন

সৌর বিদ্যুৎ বদলে দিয়েছে মতলবের চরাঞ্চলের মানুষের জীবন

শামসুজ্জামান ডলার,মতলব উত্তর(চাঁদপুর) :

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলের ৩০ হাজার মানুষের কাছে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানো অসম্ভব ভাবনা। সূর্য্য পশ্চিম আকাশ থেকে অস্ত যাবার সাথে সাথে নেমে আসে তিমির আধাঁর। চারদিকে নিরব নিস্তব্দতা। নেই কোন কোলাহল। চরাঞ্চলবাসী সবধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত যুগ যুগ ধরে। কিন্তু সৌর বিদ্যুৎ বদলে দিয়েছে মতলব উত্তর উপজেলার বিশাল ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের জীবন। সারাদেশের মানুষ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হলেও এই চরাঞ্চলের মানুষরা তখনো নির্বিঘেœ জ্বালিয়ে যাচ্ছে সৌর বিদ্যুৎ । এই সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চরাঞ্চলের মানুষরা এখন রাতের আধাঁরকে জয় করে এখন ঘরে ঘরে ফকফকা আলো জ্বালাচ্ছেন। চালাচ্ছেন টেলিভিশন, সিডি, ফ্যানসহ অনেক কিছুই। বর্তমানে তাদের জীবনে ছোঁয়া লেগেছে আধুনিকতার।সেই সাথে শিক্ষার্থীরা বিদ্যুতের আলোয় রাতের বেলাতে পড়াশোনা করতে পাড়ছে।
আগে সন্ধ্যা নামতেই গ্রামের মানুষদের খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমুতে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এ অবস্থায় চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে এগিয়ে আসে কয়েকটি এনজিও। তারা ওইসব এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রম হাতে নেয় কিছুটা সুলভ মূল্যে।
খোজখবর নিয়ে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীন শক্তি নামে দুটি প্রতিষ্ঠান ২০০৫ সালে নদী বেষ্টিত বিভিন্ন গ্রামে সৌর বিদ্যুৎ বিতরণের কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম দিকে তেমন সারা না পাওয়া গেলেও আস্তে আস্তে চরাঞ্চলের মানুষদের কাছে সৌর বিদ্যুতের কদর বাড়তে থাকে। বর্তমানে এ উপজেলার চরাঞ্চলের চরউমেদ, চরকাশিম,বোরচর, চরওয়েস্টার, বাহাদুরপুর, চরজিংকিংসহ অন্যান্য চরে সৌর বিদ্যুতের অনেক কদর।
চরকাশিমের জাকির বকাউল, নেয়ামত উলা, ইব্রাহিম গাজী জানায়, সৌর বিদ্যুতের কারনে এখন আমরা রাতে টিভি দেখতে পাচ্ছি। ছেলেমেয়েরা অনেক রাত পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পারছে। তারা আরো জানায়, সন্ধ্যার পর ভুতুড়ে এলাকার পরিণত হওয়া চরাঞ্চলের গ্রামগুলো এখন সৌর বিদ্যুতের আলোয়ে আলোকিত হয়ে উঠছে। চরাঞ্চলের মানুষ যেন নতুন জীবন পেয়েছে।
গ্রামীন শক্তি ও ব্রাকের সৌর বিদ্যুৎ বিতরণ কার্যক্রমের কয়েকজন ফিল্ট সুপারভাইজারের সাথে আলাপকালে জানা যায়, সৌর বিদ্যুৎ অতি সুলভ মূল্যে স্থাপন করা যায়। এসব সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৪টি বাল্ব, একটি টেলিভিশন ও সিডি চালানো যায়।
চরাঞ্চলের বিদ্যুৎ কার্যক্রম চালু করতে সৌর সোলার প্লান্টে লাগে একটি ১৮ ভোল্টের শক্তিশালী ব্যাটারি, চার্জার যন্ত্র, তার ও বাল্ব। সৌর বিদ্যুৎ এলাকায় পৌঁছার পর চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। 

Source: www.comillaweb.com

No comments:

Post a Comment